ক্রাইম এডিশন ডেস্ক| ২৩ এপ্রিল ২০২৫
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সংবিধান ও আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। বুধবার সকালে তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি লিখেছেন, “ইসলাম বিদ্বেষী সরকারের আমলে আলেমদের নানা ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। যারা কোরআন-সুন্নাহ নিয়ে কথা বলেন, তাদেরকে সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে।”
ড. আসিফ নজরুল জানান, সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাগুলোর একটি তালিকা তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব মামলার অধিকাংশই ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে দায়ের করা। ইতোমধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ফারাবী ইস্যু প্রসঙ্গে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “এটি একটি বিচারাধীন বিষয়। বিষয়টি নিয়ে আদালতের সম্মান রক্ষা করে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, প্রতিটি মামলায় নিরপেক্ষ তদন্ত হোক এবং যারা অন্যায়ভাবে জড়িত হয়েছেন, তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক।”
তিনি তার ফেসবুক পোস্টের একপর্যায়ে বলেন, “এই দেশে যারা ধর্মের পক্ষে কথা বলেন, তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য আগের সরকার নিরবিচারে মামলা করেছে। এসব মামলা শুধু ব্যক্তিকে অপমানিতই করেনি, বরং ইসলামিক মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত করেছে।”
আসিফ নজরুল বলেন, “সত্যের পক্ষে থাকা এবং নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানো একজন নাগরিক ও শিক্ষক হিসেবে আমার দায়িত্ব। আমি দেশবাসীর দোয়া চাই—যাতে আমি সব নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।”
হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকেও জানা গেছে, তাঁরা নতুন সরকারের প্রতি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন এবং আশা করছেন, আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা অন্যায়ভাবে দায়ের করা হয়েছে, সেগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে।
এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন সরকার ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলা’গুলোর তালিকা পর্যালোচনার উদ্যোগ নিচ্ছে এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় রেখেই বিষয়টি মূল্যায়ন করা হবে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, কোনো ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাস বা মতাদর্শের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা হলে তা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত। তারা আশা করছে, আগত সময়গুলোতে মতপ্রকাশ ও ধর্মীয় স্বাধীনতা অধিকতর সুরক্ষিত হবে।