সোহেল রানা মাসুদ | ক্রাইম এডিশন | ৭ মে ২০২৫
যুক্তরাজ্যে দীর্ঘ চিকিৎসা গ্রহণ শেষে চার মাস পর দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে কাতারের রাজপরিবারের পাঠানো একটি বিশেষ চিকিৎসা বিমানযোগে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই পুত্রবধূ—ডা. জোবাইদা রহমান (তারেক রহমানের স্ত্রী) ও সৈয়দা শামিলা রহমান (আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী)। দেশে ফেরার পুরো সময়জুড়ে বিমানবন্দর ও গুলশানের ফিরোজা বাসভবন এলাকাজুড়ে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও দলীয় কর্মীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি।
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলে সড়কের দু’পাশে হাজারো নেতা-কর্মী তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং ‘গণতন্ত্রের নেত্রী’ খালেদা জিয়ার নামে বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করেন চারপাশ। ব্যানার, পোস্টার ও জাতীয়তাবাদী আদর্শে লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁরা জানান দেন নেত্রীকে ফিরে পাওয়ার আবেগ।
ঢাকা মহানগর পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে এবং রুট নির্ধারণ করে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনে। যানজটে যাতে নগরবাসী সমস্যায় না পড়ে, সেদিকে প্রশাসন বিশেষ নজর দেয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও পুরোপুরি সুস্থ নয়। যুক্তরাজ্যের হিথরো অঞ্চলের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলে। তাঁর তত্ত্বাবধানে ছিলেন ব্রিটেনের খ্যাতনামা চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রস। দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি ও হার্টসংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন খালেদা জিয়া, যার কারণে তাঁকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তিনি জানুয়ারি মাসে একটি বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যুক্তরাজ্যে যান। একই বিমানে তিনি এবার দেশে ফিরলেন, যা রাজনৈতিক মহলে কূটনৈতিক সম্পর্কের এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবেও আলোচিত হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন বিএনপির আগামী দিনের রাজনৈতিক কৌশলে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। যদিও তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা এখনই স্পষ্ট নয়, তবু তাঁর দেশে উপস্থিতি নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন প্রাণসঞ্চার করেছে।