ক্রাইম এডিশন ডেস্ক। ১৬ মে ২০২৫
ঢাকা: তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর প্লাস্টিকের বোতল নিক্ষেপের ঘটনার পর জড়িত এক শিক্ষার্থীকে যদি দ্রুত মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে ডিবি কার্যালয় ঘেরাও করার হুমকি দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে শিক্ষার্থীরা এই হুঁশিয়ারি দেন এবং তাদের দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি নেওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য শান্তিপূর্ণ। বোতল নিক্ষেপের ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে বিচার করবে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ওই শিক্ষার্থীর ওপর কোনো ধরনের হামলা বা অবিচার বরদাস্ত করা হবে না।’ তিনি আরও জানান, ‘শিক্ষার্থীকে যদি ২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা ডিবি কার্যালয় ঘেরাও করার আন্দোলন শুরু করব।’
গত বুধবার রাতে কাকরাইল মসজিদের সামনে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংলাপ চলাকালীন একটি প্লাস্টিকের বোতল তার মাথায় আঘাত হানে। মাহফুজ আলম সেই ঘটনার পর কোনো বক্তব্য না দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এরপর ডিবি ওই ঘটনার একটি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) জানিয়েছে, আটককৃত শিক্ষার্থীকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে তার অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দাবিতে আন্দোলন করছেন। তাদের প্রধান দাবি হল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। আন্দোলনের নেতা শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অনেক সময় উত্তেজনাপূর্ণ হলেও, তারা বারবার শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চান। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারীরাও এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে আলোচনা ও সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বলেছে, তারা শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে সম্মান করে এবং সকল পক্ষের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বোতল নিক্ষেপের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরায় না ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন সামাজিক ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বড় সংকেত বহন করে। এটি তুলে ধরে যে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি গুরুত্ব না দিলে সংঘর্ষ এবং বিবাদ বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সকল পক্ষের উচিত সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নেওয়া।
সর্বশেষ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার ও নিরাপত্তার দাবিতে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। তারা আশাবাদী যে, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসবে।