ক্রাইম এডিশন ডেস্ক। ১৮ মে, ২০২৫
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে পুরনো এক মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। রবিবার বিকেলে থাইল্যান্ডগামী ফ্লাইটে ওঠার মুহূর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, বিকাল চারটার দিকে তাকে ঢাকার ভাটারা থানা থেকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং প্রয়োজন হলে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালে রাজধানীতে সংঘটিত একটি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ভাটারা থানায় দায়ের করা একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় নুসরাত ফারিয়ার নাম উঠে আসে। মামলাটি দায়ের করেন আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি। তার দাবি, বৈষম্যবিরোধী ওই আন্দোলনের সময় সরকারি সমর্থকদের ছোড়া গুলিতে তিনি আহত হন এবং অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া এতে প্রত্যক্ষভাবে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন এমন অভিযোগ ওঠে।
মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, আন্দোলন দমনে অর্থ সহায়তা দিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিয়েছেন এমন অভিযোগে মোট ২৮৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। এছাড়াও তিন থেকে চার শতাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকেও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাদী দাবি করেছেন, ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি গুরুতর আহত হন এবং রাস্তায় পড়ে যান। অভিযুক্তদের তালিকায় নুসরাত ফারিয়ার নাম যুক্ত থাকায় তদন্তে তার বক্তব্য জানা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজাহারুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত নুসরাত ফারিয়াকে মামলার গ্রেফতার দেখানো হয়নি। কেবল তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নুসরাত ফারিয়া বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো বক্তব্য দেননি। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে তার সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠ মহলে এই ঘটনাটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে।
ডিবি সূত্রে আরও জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে আরও কিছু তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাকে আবারো তলব করা হতে পারে। আপাতত তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তদন্তকারী সংস্থা।
এই ঘটনাটি ঢাকাই চলচ্চিত্র ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ আলোড়ন তুলেছে। এক জনপ্রিয় তারকার নাম এমন একটি গুরুতর মামলায় জড়িয়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা চলছে।