সোহেল রানা মাসুদ । কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট । শনিবার, ৭ জুন ২০২৫:
আজ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে লালমনিরহাট জেলার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান — নয়া দিঘী ঈদগাহ মাঠে — ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকেই মাঠজুড়ে ছিল মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। কালীগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত এই ঈদগাহ মাঠে ২৫ টি জামাত নিয়ে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমান একত্রিত হয়ে একটিমাত্র বৃহৎ জামাতে অংশগ্রহণ করেন।
নামাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ৯টা, তবে মাঠে আগত মুসল্লিদের সংখ্যা, নিরাপত্তা ও সাউন্ড সিস্টেম প্রস্তুতির কারণে নামাজ শুরু হয় ৯টা ১০ মিনিটে। সময়মতো কোরবানির প্রস্তুতির তাগিদে অনেকেই সামান্য এই বিলম্বে অস্বস্তি প্রকাশ করেন।
কর্তৃপক্ষের দুঃখপ্রকাশ
নয়া দিঘী ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়,
“আমরা যথাসময়ে জামাত শুরু করতে চেয়েছিলাম। তবে মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।”
তবে জামাতের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ। খতিব সাহেব কোরবানির তাৎপর্য নিয়ে বর্ণনা করেন এবং সকল মুসলমানের জন্য মঙ্গল কামনায় দোয়া করেন।
এতিমখানা ও কবরস্থান
নয়া দিঘী ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন রয়েছে একটি পুরনো এতিমখানা, যেখানে ঈদের দিন এতিম শিশুদের জন্য বিশেষ খাবার ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিবছর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়।
এছাড়াও মাঠের একপাশে রয়েছে “নয়া দিঘী ঈদগাহ কবরস্থান”, যা এলাকাবাসীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিসৌধস্বরূপ স্থান। ঈদের জামাত শেষে অনেক মুসল্লি কবর জিয়ারত করেন ও দোয়া পাঠ করেন।
সাউন্ড ও মাঠ ব্যবস্থাপনা
এবারের ঈদে উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। মাইকে স্পষ্টভাবে খুতবা ও নামাজের তাকবির প্রচার সম্ভব হয়। মাঠে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সারিবদ্ধভাবে মুসল্লিদের দাঁড় করানো, প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ নিশ্চিত করা হয়।
মুসল্লিদের অনুভূতি
নাম প্রকাশ না করে এক মুসল্লি বলেন, “পরিকল্পনা ভালো ছিল, মানুষ অনেক এসেছে, তাই একটু দেরি হয়েছে — সেটা বুঝতে পারছি। তবে পরিবেশ চমৎকার ছিল, শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতে পেরেছি।”
উপসংহার
লালমনিরহাট জেলার নয়া দিঘী ঈদগাহ ময়দান এখন শুধুমাত্র নামাজের স্থান নয় — এটি একটি ধর্মীয় ও সামাজিক ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রতি বছর ঈদের দিনে এখানকার এই বিশাল জামাত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একত্রিত করে, সমাজের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তোলে।