সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান জেলা লালমনিরহাটে অবস্থিত লালমনিরহাট বিমানবন্দর আবারো চালু হয়েছে। এটি কেবল লালমনিরহাটই নয়, পুরো উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর নতুন প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার আধুনিকীকরণের মাধ্যমে এই বিমানবন্দর পুনরায় সচল হওয়া, উত্তরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন সম্ভাবনার সূচনা করেছে।
বিমানবন্দর চালুর ফলে শুধু ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যাতায়াত নয়, আন্তর্জাতিক যোগাযোগেও বাংলাদেশের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে, প্রতিবেশী দেশ চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে সহজ যোগাযোগের সুযোগ বাড়বে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্ষমতা অর্জন করেছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় প্রভাব ফেলবে। লালমনিরহাট বিমানবন্দর এর মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ও পর্যটকেরা দ্রুত ও সুরক্ষিত যাতায়াত করতে পারবে।
বর্তমানে লালমনিরহাটে সরাসরি ঢাকা থেকে কোনও ফ্লাইট চালু নেই। যারা লালমনিরহাট যেতে চান, তাদেরকে ঢাকার থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর হয়ে যেতে হয়। এটি যাত্রীদের জন্য সময় ও খরচ উভয় দিকেই ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় চালু হলে, সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে যাত্রীদের জন্য গন্তব্যে পৌঁছানো অনেক সহজ ও দ্রুত হবে।
সরকারি কর্মকর্তা ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লালমনিরহাট বিমানবন্দর উন্নত প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ মানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে ঢাকা ছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রধান শহর এবং প্রয়োজনমতো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি ও সমাজ উন্নয়নে বিমানবন্দরটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সঙ্গে পর্যটন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হবে। স্থানীয় মানুষজন আশা প্রকাশ করেছেন, এই বিমানবন্দর চালু হওয়ায় তাদের জীবনযাত্রায় অনেক সুবিধা আসবে। বিশেষ করে জরুরি চিকিৎসা, প্রশাসনিক কাজে যাতায়াতের সময় কমে যাবে এবং বিভিন্ন ধরনের পণ্য পরিবহন আরও সহজ হবে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও যোগাযোগ গত কয়েক বছরে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বেইজিং-ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে দ্রুত ও সাশ্রয়ী যাতায়াতের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। এছাড়া, নতুন করে রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রম সহজতর হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন এবং বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিমানবন্দরটি কেবল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নয়, এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পরবর্তী সময়ে এটির পরিধি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে যাতে বৃহত্তর পর্যায়ে বিমান চলাচল সম্ভব হয়।
বিমানবন্দর পুনরায় চালু হওয়ায় এলাকায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, নতুন ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং শিক্ষাবৃত্তি ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়েছে।
সব মিলিয়ে, লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালু হওয়া উত্তরাঞ্চলের জন্য এক যুগান্তকারী ঘটনা। এটি শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সীমাবদ্ধ না থেকে দেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশাল ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
Leave a Reply