ক্রাইম এডিশন। গাজীপুর।
ঈদের ছুটি শেষে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন গার্মেন্টস শ্রমিক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ। বিশেষ করে রোববার (১৫ জুন) থেকে সরকারি অফিস-আদালত এবং গার্মেন্টস কারখানা পুনরায় চালু হওয়ায় ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ আজ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এর ফলে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, সালনা, মেম্বারবাড়ি, বোর্ডবাজারসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।
ভোর থেকে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সড়কের বিভিন্ন অংশে গাড়ি চলাচল একেবারে স্থবির হয়ে পড়ে। যানজটের কারণে স্বাভাবিক গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লেগেছে দ্বিগুণেরও বেশি।
একযোগে ফেরায় সৃষ্ট হয়েছে চরম চাপ
আজকের দিনটিকে ঘিরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরাও রাজধানীতে ফিরছেন। ফলে যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ একসাথে পড়ে গাজীপুরের মহাসড়কে।
এক গার্মেন্টস শ্রমিক বলেন, “কাল থেকে কাজ শুরু। আজই ফিরতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু রাস্তায় এত ভিড়, যান চলছেই না।”
এক কর্মজীবী যাত্রী বলেন, “আমার অফিস রবিবার খুলবে, তাই আজ ফিরছি। কিন্তু জ্যামে পড়েই বুঝলাম, আরেকটু আগেই ফিরলে ভালো হতো।”
অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, আজ অনেক বাস ও মিনিবাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তবে যানবাহনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় স্বাভাবিক চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে। যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
এক নারী শ্রমিক বলেন, “ভাড়া একটু বেশি চাচ্ছে, কিন্তু বড় সমস্যা হলো—যাত্রীর তুলনায় গাড়ি কম। গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।”
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ
ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টহল এবং মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু একযোগে এত মানুষ বের হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, “আজকের মতো চাপ বছরে খুব কম সময়ই পড়ে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে।”
পরিকল্পনার অভাবে বারবার একই ভোগান্তি
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিবছর ঈদের পর একই পরিস্থিতি হলেও এর আগাম কোনো প্রস্তুতি দেখা যায় না। ভুক্তভোগীরা বলছেন, গার্মেন্টস খোলার তারিখ ও অফিস শুরুর বিষয়টি আগে থেকেই জানা থাকলেও জনচাপ মোকাবেলায় যথাযথ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়নি।
ঈদের ছুটির শেষে গাজীপুরে ঢাকামুখী মানুষের ঢল এবং যানজটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। শ্রমিক, কর্মজীবী ও সাধারণ যাত্রীর চাপ একত্রে পড়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। প্রতি বছরের এই পুনরাবৃত্ত সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের আগাম প্রস্তুতি ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি।
Leave a Reply