সোহেল রানা মাসুদ। অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।
দেশে আবারও নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে, যা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। গত এক সপ্তাহে মোট ১৩৪টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ৩৬ জনের শরীরে নতুন ধরনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং একজন আক্রান্ত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন।
চিকিৎসকদের মতে, এই নতুন ধরনটি ওমিক্রন পরিবারেরই অংশ এবং এটি তুলনামূলকভাবে দ্রুত সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তবে এই মুহূর্তে আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. রাজীব কুমার সাহা জানান, নতুন ধরনটির উপসর্গ পুরাতন কোভিড-১৯ লক্ষণের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। যেমন – সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর এবং ক্লান্তি। তার মতে, নিয়মিত হাইজিন মেনে চলা, মাস্ক ব্যবহার এবং হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুললেই সংক্রমণ রোধ সম্ভব।
“এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত,” বলেন ডা. সাহা।
সাম্প্রতিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৮ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় ৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা পরীক্ষার তুলনায় ৭৫ শতাংশ শনাক্তের হার নির্দেশ করে। এছাড়া ৫ জুনে একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
সীমান্ত ও বন্দরে সতর্কতা জোরদার
ভয়াবহ রূপ নিতে পারে আশঙ্কায় সীমান্ত ও বন্দরে স্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং চালু করা হয়েছে। তাপমাত্রা মাপার জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার এবং থার্মাল স্ক্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে, যা স্পর্শবিহীন প্রযুক্তিতে কার্যকরভাবে কাজ করছে।
জনসাধারণের করণীয়
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সাধারণ জনগণকে জনসমাগমপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলা এবং মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে, বিশেষ করে যারা বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় ভুগছেন। এছাড়া, কেউ অসুস্থ বোধ করলে বাসায় অবস্থান করা এবং প্রয়োজন হলে করোনা পরীক্ষা করানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতি
পাশের দেশ ভারতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। সে দেশেও নতুন ধরনটি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানা গেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অভিবাসন ও চলাচলের মাধ্যমে এ সংক্রমণ দেশের ভেতরেও বিস্তার লাভ করতে পারে।
ভবিষ্যতের প্রস্তুতি
চিকিৎসকদের মতে, নতুন কোনো ভাইরাস মোকাবিলায় ব্যক্তিগত সচেতনতা এবং সরকারি পর্যায়ে প্রস্তুতি – দুটোই সমান জরুরি। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে, যদি আমরা এখন থেকেই সতর্ক না হই।
সারসংক্ষেপে করণীয়:
নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া
মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করা
অসুস্থতা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
জনসমাগম এড়িয়ে চলা
সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলা