ক্রাইম এডিশন। অনলাইন ডেস্ক।
রাজধানীর ডেমরা থানা পুলিশ একটি সফল অভিযান পরিচালনা করে চুরি হওয়া একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার এবং মোটরসাইকেল চোর চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের নাম যথাক্রমে সুজন মিয়া (২২) ও মোঃ ইউসুফ (২০)।
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানাধীন সাচার বাজার এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানটি ডেমরা থানার একটি বিশেষ তদন্তকারী দল প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সম্পন্ন করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সাগর নামের এক ব্যবসায়ী গত ১৩ জুন রাত ৯টা ২ মিনিটে মোটরসাইকেলযোগে চাঁদপুর থেকে ঢাকার মুগদার উদ্দেশে রওনা হন। পরদিন অর্থাৎ ১৪ জুন রাত আনুমানিক ১২টা ৫ মিনিটে তিনি ডেমরা থানাধীন তারাবো টু যাত্রাবাড়ি এক্সপ্রেসওয়ের স্টাফ কোয়ার্টার ওভারব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে, পেছন দিক থেকে আসা একটি ইয়ামাহা R15 মডেলের মোটরসাইকেল তার গতিরোধ করে।
ওই মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রথমে সাগরকে সিগনাল দিয়ে থামতে বাধ্য করে। এরপর তারা সাথে থাকা বিদ্যুতের তারে মোড়ানো লাঠি ও ধারালো চাপাতি দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। সাগর গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে গেলে অভিযুক্তরা তার মোটরসাইকেলটি নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। এই ঘটনায় ১৬ জুন ভুক্তভোগী সাগর ডেমরা থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ডেমরা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামীদের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে বিশেষ অভিযানে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার সাচার বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার একটি গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। পরে ভুক্তভোগী সাগর সেটিকে তার নিজস্ব মোটরসাইকেল হিসেবে শনাক্ত করেন।
এ ব্যাপারে থানার একজন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা আসামীদের রিমান্ডে নিয়ে আরো তথ্য বের করার চেষ্টা করছি। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এদিকে এমন ঘটনার পর এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে যে, এ ধরনের অপরাধ দমনে তাদের অভিযান চলমান থাকবে এবং অপরাধীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এই ঘটনার মাধ্যমে রাজধানীতে সক্রিয় চোর চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের তৎপরতা ও প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের সফলতা প্রমাণিত হয়েছে। একইসঙ্গে, এটি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল ও পেশাদার আচরণের দৃষ্টান্ত হিসেবেও প্রশংসিত হচ্ছে।