ক্রাইম এডিসন। অনলাইন ডেস্ক।
রাজধানী ঢাকার পল্লবী থানা এলাকায় অবস্থিত একটি বস্তির পাশে ময়লার স্তুপ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদের মধ্যে রয়েছে দুইটি কালো রঙের বিদেশি শটগান, একটি সিলভার রঙের পিস্তল, দুটি সিলভার রঙের ম্যাগাজিন, ৫০ রাউন্ড তাজা পিস্তলের গুলি এবং ৩১০ রাউন্ড শটগানের সীসা গুলি।
এ ঘটনা ঘটে বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখে। ডিবির তথ্য অনুযায়ী, পল্লবী থানাধীন ১৪ তলা বস্তির পিছনে অবস্থিত কালশী স্টিল ব্রিজের নিচে জমে থাকা ময়লার স্তুপে গোপন সূত্রে অস্ত্র ও গুলি থাকার খবর পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে রাত প্রায় ১১টা ৪৫ মিনিটে ওয়ারী বিভাগের একটি ডিবি টিম সেখানে অভিযান পরিচালনা করে এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান
ডিবি ওয়ারী বিভাগ জানিয়েছে, ঘটনার দিন রাতে গোপন সূত্রে তারা খবর পান যে কালশী স্টিল ব্রিজের নিচে ময়লার স্তুপে অস্ত্র ও গুলি ফেলে রাখা হয়েছে। খবর পাওয়ার পরপরই বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় একটি বিশেষ টিম দ্রুত সেখানে পৌঁছে অভিযান চালায়। দীর্ঘ সময় অনুসন্ধান চালিয়ে তারা ময়লার স্তূপের ভেতর থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো অপরাধী চক্র বা সন্ত্রাসী দল পুলিশের নজর এড়িয়ে চলতে গিয়ে এসব অস্ত্র ফেলে রেখে পালিয়েছে। যেহেতু স্থানটি বস্তির পেছনের একেবারে নির্জন ও কম নজরে পড়া এলাকা, তাই অস্ত্র গোপন করার জন্য এই স্থানটি বেছে নেওয়া হয়ে থাকতে পারে।
উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের প্রকার ও অবস্থান
উদ্ধার করা অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে দুইটি বিদেশি শটগান, যেগুলোর গায়ে কালো রঙের আবরণ রয়েছে। এ ছাড়া একটি সিলভার রঙের বিদেশি পিস্তল এবং দুটি সিলভার রঙের ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে। গোলাবারুদের মধ্যে রয়েছে ৫০ রাউন্ড পিস্তলের তাজা গুলি এবং ৩১০ রাউন্ড শটগানের সীসা গুলি। এসব অস্ত্র ও গুলিগুলো একাধিক ব্যাগে করে ময়লার স্তূপের গভীরে লুকানো ছিল।
আইনি প্রক্রিয়া চলমান
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নাম জানা না গেলেও, ডিবি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের উৎস, ব্যবহারের উদ্দেশ্য এবং কে বা কারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তা খুঁজে বের করার জন্য আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
গোয়েন্দা বিভাগ আরও জানিয়েছে, অস্ত্রগুলো কোন দেশের তৈরি এবং সেগুলো কীভাবে দেশে প্রবেশ করেছে— সে বিষয়েও তদন্ত চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে আশপাশের এলাকায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজ ও সম্ভাব্য প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।
নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
রাজধানীর জনবহুল এলাকায় এমন বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যেহেতু এলাকাটি একটি বস্তির পাশে এবং দিন-রাতে বহু মানুষের চলাচল রয়েছে, সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বেশি বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং যে কোনো মূল্যে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply