সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন ডেস্ক। লালমনিরহাট।
লালমনিরহাট জেলার মাদক প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনীর বিশেষ অভিযান সফল হয়েছে। গত ২২ জুন ২০২৫ তারিখে জেলা গোয়েন্দা শাখা, লালমনিরহাটের উদ্যোগে পরিচালিত মাদকবিরোধী অভিযানে ইয়াবা ট্যাবলেট এবং মাদকদ্রব্য ইস্কাপ সিরাপসহ একজন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই অভিযান পরিচালনা করেন লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম মহোদয়ের নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মীরা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লালমনিরহাট থানাধীন গোকুন্ডা ইউনিয়নের গুড়িয়াদহ মৌজাস্থ বুদার বাঁশেরতল এলাকায় বিশেষ নজরদারি ও তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় ওই স্থান থেকে ১০০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ১০০ বোতল ইস্কাপ সিরাপ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও, মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারির নাম মোঃ আশরাফুল হক (৪১)। তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ মাদক আইনের অধীনে মামলা দায়ের করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
মাদকবিরোধী এই অভিযানের মাধ্যমে পুলিশের উদ্দেশ্য হলো সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করা। পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম মাদক দমনে জোরদার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি জনগণকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন এবং বলেন, “মাদক সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত আমাদের কাজ থামবে না। প্রতিটি মানুষকে মাদক বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হতে হবে এবং মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।”
এই ধরনের অভিযান শুধু মাদককারবারিদের ধরতে সাহায্য করে না, বরং যুব সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাদক গ্রহণ ও বিক্রয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের অবদান অপরিসীম।
জনসাধারণকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়ে পুলিশ আরও বলেন, “আপনারা যদি মাদকের কোনও তথ্য পান, তা অবিলম্বে নিকটস্থ থানায় অথবা গোয়েন্দা শাখায় জানান। এতে করে অপরাধীরা দ্রুত শনাক্ত হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।”
মাদক নির্মূল করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং ছোট থেকে বড় পর্যায়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে মাদক থেকে দূরে রাখতে পরিবার, শিক্ষক, সমাজের সকল স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ জরুরি। মাদকবিরোধী কর্মসূচি ও প্রচারণা চালিয়ে যেতে হবে যেন মাদক যেন সমাজের কোনো স্থান পেতে না পারে।
শেষ পর্যন্ত বলা যেতে পারে, মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব ও নিয়মিত অভিযান অপরিহার্য। পুলিশের এই ধরণের অভিযান সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।