সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন ডেস্ক।
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশের মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে আটক হয়েছে দুইজন মাদক কারবারি, যারা সম্পর্কে জামাই ও শ্বাশুড়ী। অভিযানে পুলিশ ৪ কেজি ৮০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেছে এবং মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে।
গাইবান্ধা জেলার পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় পরিচালিত এই অভিযানটি হয় গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের সার্বিক তত্ত্বাবধানে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুন ২০২৫ ইং তারিখে বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোবিন্দগঞ্জ থানা মোড়ের চারমাথা এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে তল্লাশি চালায় পুলিশের একটি চৌকস দল।
তল্লাশির সময় পুলিশের চোখে পড়ে মোটরসাইকেলের ট্যাংকি ও সিটের নিচে কিছু অসামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় তল্লাশি চালিয়ে সেখানে অভিনব পদ্ধতিতে রাখা ৪ কেজি ৮০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে ওই মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়, যেটি মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন—ফারুক হোসেন (২৮) এবং নাসিমা বেগম (৪৫)। তাঁরা দুজনই কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। ফারুক হোসেন নাসিমা বেগমের জামাই এবং তাঁরা যৌথভাবে গাঁজা পরিবহনে জড়িত ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, তারা দীর্ঘদিন ধরেই কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক সরবরাহ করে আসছিল। বিশেষভাবে তৈরি করা মোটরসাইকেলের সিট ও ট্যাংকির নিচে লুকানো কৌশলে তারা মাদক পরিবহন করত। পুলিশের ধারণা, মাদকের এই চালানটি স্থানীয় কোনো চক্রের কাছে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
পুলিশ আরও জানায়, এই দুই আসামির বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু হয়েছে এবং তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে এবং এই মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, “মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত মাদকবিরোধী কার্যক্রম জোরদার করছি। জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চক্রভিত্তিক মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।”
স্থানীয় জনগণ পুলিশের এই সফল অভিযানের প্রশংসা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও এমন কার্যকরী পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
মাদক নির্মূলে গাইবান্ধা জেলা পুলিশের এমন তৎপরতা এলাকায় নিরাপত্তা ও স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। একাধিক সূত্র মতে, জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা এবং অন্যান্য জেলা থেকে গাইবান্ধা হয়ে মাদক পরিবহনের চেষ্টা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ কৌশলগত অবস্থান থেকে নজরদারি আরও জোরদার করেছে। ফলে ধরা পড়ছে এমন বহু অভিনব কৌশলে করা অপরাধ।
এ ধরনের অভিযান আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ।