1. info@crimeedition.com : Crime Edition : Crime Edition
  2. masud399340@gmail.com : ক্রাইম এডিশন : ক্রাইম এডিশন
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
শিরোনাম :
রাজধানীতে Pope’s Feast, আন্তধর্মীয় সম্প্রীতির আহ্বান জামায়াত সেক্রেটারির শার্শায় পুলিশের অভিযানে ১২ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার এক কেরানীগঞ্জে অস্ত্রসহ দুই যুবক আটক, পুলিশি অভিযান সফল ঢাকায় পৃথক অভিযানে ১০০ ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক নারায়ণগঞ্জে অগ্নি নির্বাপন ও প্রাথমিক চিকিৎসা মহড়ায় শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ উত্তর বাংলা কলেজে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, সবুজ পৃথিবীর অঙ্গীকার শেরপুর সদর থানা বার্ষিক পরিদর্শনে এএসপি মিজানুর ভূঁঞা ঢাকায় ডিবি (উত্তর) গ্রেফতার করেন ২০ গ্রাম হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ী শিয়াল খোওয়া চাকলা হলমোর সড়কে অচেতন ব্যক্তিকে উদ্ধার ঢাকার নিউমার্কেটে জুতার শোরুমে বৈদ্যুতিক গোলযোগে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

মিস হওয়া পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসা: মানবিকতার জয়

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
  • ১৫২ বার পড়া হয়েছে

সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন ডেস্ক।

 

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) থেকে শুরু হয়েছে। দেশজুড়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে প্রায় ১২ লাখ ৫১ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে এ পরীক্ষায়। তবে প্রথম দিনেই এক ব্যতিক্রমী এবং হৃদয়স্পর্শী ঘটনা ঘটে রাজধানীর একটি কেন্দ্রে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন আনিসা আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী, যিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী। আনিসা নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি, কারণ সকালেই তার মা হঠাৎ মেজর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। মা–ই পরিবারে একমাত্র অভিভাবক, কারণ আনিসার বাবা দুই বছর আগেই মৃত্যুবরণ করেন। এমন অবস্থায় মাকে হাসপাতালে ভর্তি করেই কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসেন আনিসা।

দুঃখজনকভাবে, প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছানোয় তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের গেটে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আনিসা। এ দৃশ্য উপস্থিত অভিভাবক, পথচারী এবং পরীক্ষার্থীদের চোখে জল এনে দেয়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক সহানুভূতির সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি নজরে আসার পর সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে আনিসার বিষয়ে বিস্তারিত লেখেন। তিনি জানান, আনিসা, তার মা এবং কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান স্যারের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি পূর্বের একটি নজিরও উল্লেখ করেন—২০০০ সালে মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৩২ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ বিবেচনায় পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

অ্যাডভোকেট কাজল আশা প্রকাশ করেন, শিক্ষা উপদেষ্টা ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এই বিষয়ে মানবিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আনিসার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবেন, যেন তাকে আইনি লড়াইয়ে যেতে না হয়। তিনি আনিসা এবং তার মাকে আইনি সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীর খালা গণমাধ্যমকে জানান, বাড়িতে মা অসুস্থ হওয়ার পর আনিসাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরিবারে আর কেউ না থাকায়, সব দায়িত্ব তার ওপর পড়ে। এরপর দ্রুত কেন্দ্রে পৌঁছেও তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। খালার মতে, এটা শুধুই নিয়মের কথা বলে অমানবিক সিদ্ধান্ত।

অনেক অভিভাবক ও সচেতন নাগরিক মন্তব্য করেছেন, মেয়েটি ইচ্ছা করে পরীক্ষায় দেরি করেনি। বরং সে এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে—মানবিক দায়িত্ব পালন করে, তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় অংশ নিতে ছুটে এসেছে। এর মধ্যে আছে আত্মত্যাগ, দায়িত্ববোধ এবং অধ্যবসায়।

তবে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীর পরিবার জানায়, আনিসার বাকি পরীক্ষাগুলোর ক্ষেত্রে যেন এমন কিছু না ঘটে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রথম দিনের অনুপস্থিতির জন্য বিশেষ বিবেচনায় বিকল্প পরীক্ষার সম্ভাবনাও আলোচনাধীন।

এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, ‘নিয়ম’ কখনো কখনো মানবিকতা ও বাস্তবতার সঙ্গে সমন্বয় করে দেখা উচিত। নিয়ম মানা জরুরি, তবে মানবিক ব্যতিক্রম সেখানে আরও জরুরি হতে পারে। আনিসার মতো সংগ্রামী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন মানবিক নজির স্থাপন করতে পারলে অনেক হতাশ শিক্ষার্থীর জন্য উৎসাহের দৃষ্টান্ত তৈরি হবে। সমাজ ও প্রশাসন একসঙ্গে মানবিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আনিসার মতো মেধাবী, দুঃসময়ের যোদ্ধাদের পাশে দাঁড়ালে, তবেই আমরা প্রকৃত অর্থে ‘মানবিক বাংলাদেশ’-এর দিকে এগিয়ে যেতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন