সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন।
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার সামনে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের বর্বর হামলার বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর চৌরাস্তায় অনুষ্ঠিত হয় এক প্রতিবাদী মশাল মিছিল। এই মিছিলে প্রগতিশীল ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন এবং ক্ষোভের সঙ্গে দাবি জানান, পটিয়ার ঘটনার দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।
প্রতিবাদকারীরা ব্যানারে লেখেন, “পটিয়ায় শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের ফ্যাসিবাদী হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল”। রাত ৮টা নাগাদ মিছিল শুরু হয় এবং বক্তৃতা ও স্লোগানে মুখর করে তোলে গোটা চৌরাস্তা। উপস্থিতদের হাতে ছিল জ্বালানো মশাল—প্রতীক যেন আলো আর প্রতিবাদের।
পটিয়ার ঘটনার প্রতিবাদেই গাজীপুরে রাস্তায় নামলো ছাত্র-জনতা
চট্টগ্রামের পটিয়া থানায় ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাতে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ছাত্রলীগের এক নেতাকে পুলিশে হস্তান্তর করতে গেলে পুলিশ তাকে আটক না করে উল্টো আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ চালায়। এতে অন্তত ২০-২৫ জন আহত হন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। চট্টগ্রামের ঐ আন্দোলনের পটভূমিতেই আজ গাজীপুরে এই প্রতিরোধ গড়ে ওঠে।
মশাল মিছিলে বক্তারা বলেন, “আজ আমরা যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছি তারা শুধু গাজীপুরের নয়, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী সমাজের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। চট্টগ্রামে যে পুলিশি বর্বরতা চালানো হয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য। যারা শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরিয়েছে, তাদের রক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। তাদের বিচার চাই, বরখাস্ত চাই।”
নারী উপস্থিতি ছিল না, তবু কণ্ঠে প্রতিবাদ দৃপ্ত
এই মিছিলে নারীদের উপস্থিতি দেখা যায়নি, তবে উপস্থিত সকলে দৃপ্ত কণ্ঠে একাত্মতা প্রকাশ করেন পটিয়ার শিক্ষার্থীদের সাথে। বক্তৃতায় উঠে আসে পুলিশ বাহিনীর দমনমূলক আচরণ, প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্ব এবং ছাত্রদের মৌলিক অধিকারের সংকোচনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
বিচার না হলে রাজপথেই জবাব দেবে ছাত্রসমাজ
মিছিলে উপস্থিত আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যদি এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত না হয়, যদি হামলাকারী পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে ছাত্র সমাজ পরবর্তী সময়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। রাজপথেই জবাব দেওয়া হবে অন্যায়ের।”
বক্তারা আরও বলেন, “শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তা বদলি করে এই অন্যায় ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। এটা কোনো ট্রান্সফার গেম নয়। আমরা বিচার চাই—যেখানে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হবে।”
শেষ কথা
গাজীপুরের এই মশাল মিছিল প্রমাণ করেছে, একটি অঞ্চলের অন্যায় আজ আর স্থানীয় থাকে না—তার ঢেউ পৌঁছে যায় দেশব্যাপী। পটিয়ার শিক্ষার্থীদের রক্তে ভেজা রাজপথের প্রতিবাদ এবার গাজীপুরে আলো হয়ে জ্বলে উঠল।