সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন।
শিবপুর মডেল থানার পুলিশ দল দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের লাখপুর বাজারের উত্তরে অবস্থিত বাবুল নাজিরের কলাবাগানের ভিতর একটি অবৈধ জুয়া চলাকালীন ৭ জন জুয়ারিকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুত আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় পাওয়া গেছে নিম্নরূপ:
১. দৌলত হোসেন (৩৮ বছর), চরআলিনগর
২. খোরশেদ আলম, চরসিন্দুর, থানা পলাশ
৩. ফারুক (৪৫ বছর), হরিনারায়নপুর
৪. আলামিন (৩৮ বছর), মানিকদী
৫. মুকসিন (৪৪ বছর), শিমুলিয়া
৬. সেলিম (৩৫ বছর), লাখপুর, শিবপুর
৭. সুরুজ (৫২ বছর), লাখপুর, শিবপুর
পুলিশ জানায়, স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে দুলালপুর এলাকায় অভিযান চালানো হয় এবং অবৈধ জুয়া খেলার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। শিবপুর থানা পুলিশের এই সাফল্যে এলাকার সাধারণ জনগণ অনেকটাই স্বস্তিবোধ করছেন। অবৈধ জুয়া, মাদকসহ অপরাধ নির্মূলের জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিকভাবে তৎপর রয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।
জুয়ারিরা মূলত বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা ও শ্রমজীবী ব্যক্তি হলেও এই ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় সমাজে নানামুখী সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব অপরাধী শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতার করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অবৈধ জুয়া খেলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এলাকার অপরাধ প্রবণতা কিছুটা কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। অপরাধ নির্মূলে পুলিশ ও প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদী সুফল বয়ে আনবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
শিবপুর মডেল থানার পুলিশ আরও বলেছে, অবৈধ কর্মকাণ্ড রোধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। জনগণকেও সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে অপরাধীরা সমাজ থেকে নির্মূল হতে পারে।
এ ঘটনার পর শিবপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন অপরাধের খবর পাওয়া যাচ্ছে যেখানে অবৈধ জুয়া খেলা অন্যতম সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাই এই গ্রেফতারের ঘটনা সমাজে একটি ইতিবাচক বার্তা হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে।
অবৈধ জুয়া খেলা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান প্রয়োজন
জুয়া একটি সামাজিক ব্যাধি যার মাধ্যমে মানুষ নানা ধরনের অর্থনৈতিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ জুয়া খেলা এখনো ব্যাপক মাত্রায় প্রচলিত থাকায় এই অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শিবপুর থানার পুলিশ যেমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, অন্যান্য থানাগুলোকেও এ ধরনের অভিযান চালিয়ে অবৈধ কর্মকাণ্ড নির্মূল করতে হবে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অবৈধ জুয়া খেলায় জড়িত ব্যক্তিরা অনেক সময় মাদকাসক্তি, পারিবারিক কলহ, আর্থিক দুর্দশার মতো সমস্যায় পতিত হয়। এ কারণে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি হয়। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সমাজের সচেতন অংশীদারদের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন।
অবৈধ জুয়া খেলার বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি
শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করলেই সমস্যা সমাধান হয় না, পাশাপাশি সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্থানীয় নেতা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংগঠনকে ভূমিকা রাখতে হবে, যেন মানুষ অবৈধ জুয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো বুঝতে পারে এবং দূরে থাকতে আগ্রহী হয়।
স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে দীর্ঘমেয়াদে সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব। অবৈধ জুয়া বন্ধে পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশের উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারি নীতিমালা গ্রহণ ও কার্যকর বাস্তবায়ন প্রয়োজন।