ক্রাইম এডিশন। অনলাইন ডেস্ক।
সূত্র: জেলা পুলিশ জামালপুর।
“শিক্ষা ও সচেতনতায় শিশুর ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে হবে”—এই স্লোগানে জামালপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাবেশ, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাল্যবিবাহ ও মাদকের ভয়াবহ প্রভাব থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
জামালপুর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের তত্ত্বাবধানে এবং জেলা শিশু কল্যাণ এডভোকেসি নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয়, উন্নয়ন সংঘ এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ। আয়োজনটি আজ ১৬ জুলাই, কেন্দুয়া এলাকার বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক জনাব হাছিনা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার জনাব সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, পিপিএম-সেবা। তাঁরা বলেন, সমাজ থেকে বাল্যবিবাহ ও মাদক নির্মূল করতে হলে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বক্তারা আরও জানান, শিশুদের নিরাপদ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে “আমার গ্রাম আমার দায়িত্ব, শিশুর জীবন হোক বাল্যবিবাহ মুক্ত – বাল্যবিবাহকে না বলুন” এই বার্তাটি তুলে ধরা হয়। বক্তৃতায় বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়, কীভাবে পরিবার ও সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগ একটি শিশুকে বাল্যবিবাহ কিংবা মাদকাসক্তি থেকে বাঁচাতে পারে।
সমাবেশ শেষে পরিবেশ রক্ষার বার্তা পৌঁছে দিতে ফলজ গাছের চারা বিতরণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশ নেয় শতাধিক শিক্ষার্থী। গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, শিশুর সুষ্ঠু বিকাশের জন্য একটি সুস্থ ও সবুজ পরিবেশ অপরিহার্য। এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় অবদান রাখার আহ্বান জানানো হয়।
দিনের দ্বিতীয় ভাগে, উপজেলা প্রশাসন জামালপুর সদর এর আয়োজনে "রাখিব চারপাশ পরিস্কার, করিব ডেঙ্গু প্রতিকার" এই প্রতিপাদ্যে একটি সচেতনতামূলক র্যালি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পালিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব জিন্নাত শহীদ পিংকি-এর সভাপতিত্বে র্যালিটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা হয়, যেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্পৃক্ত করা হয়।
এই কর্মসূচিগুলোর মধ্য দিয়ে প্রশাসনের পাশাপাশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। শিশুর নিরাপদ ভবিষ্যতের স্বপ্নে সবাই একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, গণমাধ্যমকর্মী, এবং অভিভাবকবৃন্দ। সকলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি রূপ নেয় একটি সচেতনতা মূলক সামাজিক আন্দোলনে।
এই ধরনের উদ্যোগ শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক সচেতনতা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে শিশু সুরক্ষায় সমাজকে সচল ও দায়িত্বশীল করে তোলে।