ক্রাইম এডিশন। ডেস্ক রিপোর্ট।
ঢাকা জেলার গোয়েন্দা (ডিবি উত্তর) শাখার এক সফল অভিযানে সাভার এলাকায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের এই তৎপরতা মাদক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন। অভিযানের সময় উদ্ধার করা হয় ইয়াবা ট্যাবলেট ছাড়াও মাদক বিক্রির নগদ অর্থ।
বিশেষ অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকা জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামান পিপিএম। তার দিকনির্দেশনায় ২১ জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত আনুমানিক ৯টা ৩০ মিনিটে (২১:৩০) ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর একটি দক্ষ টিম সাভার মডেল থানার রাজাশন এলাকায় অভিযান চালায়।
অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় মোঃ বিপ্লব হাসান (২৮), পিতার নাম- খায়রুল ইসলাম, মাতার নাম- দিপালী। তার স্থায়ী ঠিকানা জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার কাঁজাইকাটা গ্রামে হলেও বর্তমানে সে সাভার থানার রাজাশন পালোয়ান পাড়ার রাজু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে বসবাস করছিল।
গ্রেপ্তারের সময় তার হেফাজত থেকে মোট ১৫৪ (একশত চুয়ান্ন) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও মাদক বিক্রির নগদ ৭,৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত বিপ্লব দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং সে বিভিন্ন এলাকায় মাদক সরবরাহ করত।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানায় নিয়মিত একটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার অন্যান্য সহযোগীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টাও চলমান রয়েছে।
পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামান পিপিএম মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। জনগণের সহযোগিতায় আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের শিকড় উপড়ে ফেলতে সক্ষম হবো।”
তিনি আরও বলেন, “তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে হলে মাদকের বিস্তার রোধ করতে হবে। আর সে লক্ষ্যে আমাদের টিম প্রতিনিয়ত মাঠে রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার হবে।”
স্থানীয় এলাকাবাসী পুলিশি অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছে এবং মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। অনেকে জানান, রাজাশন এলাকায় কিছুদিন ধরেই মাদক কেনাবেচার গুঞ্জন চলছিল। পুলিশের এই পদক্ষেপে এলাকাটি কিছুটা হলেও নিরাপদ হবে বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে, গ্রেপ্তারকৃত বিপ্লব হাসানের বিরুদ্ধে অতীতেও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকলেও সেগুলো প্রমাণের অভাবে উপেক্ষিত ছিল বলে জানা গেছে। তবে এবার হাতে-নাতে গ্রেপ্তারের ফলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশা করা যায়।
ঢাকা জেলা পুলিশের এই ধরনের নিয়মিত ও পরিকল্পিত অভিযান মাদক নির্মূলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। পুলিশের সূত্র জানায়, জেলা গোয়েন্দা বিভাগ (উত্তর) বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি বৃদ্ধি করেছে এবং মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করতে প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করছে।
দেশজুড়ে মাদকের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যদি মাদক ব্যবসার তথ্য প্রদান করেন, তাহলে মাদক নির্মূল কার্যক্রম আরও সফল হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।