ক্রাইম এডিশন, অনলাইন ডেস্ক
সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত চামড়া শিল্প নগরীর একটি প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত চুরির ঘটনায় রপ্তানির জন্য প্রস্তুতকৃত ১৬ বান্ডেল চামড়াসহ দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে ‘মেসার্স রাইসা লেদার’ নামক প্রতিষ্ঠানে, যেখান থেকে আনুমানিক পনেরো লক্ষ টাকা মূল্যের চামড়া চুরি হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ৬ জুলাই ২০২৫ তারিখ সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে, যখন কারখানার ব্যবস্থাপক মোঃ জোনায়েদ হোসেন পলাশ কাজে এসে দেখেন মজুদকৃত মালামালের ঘাটতি রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে তিনি কারখানার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করেন। ফুটেজে দেখা যায়, রাত ২টা থেকে ৪টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোরেরা কারখানার জানালা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং চামড়ার বান্ডেল নিয়ে পালিয়ে যায়।
ব্যবস্থাপক পলাশের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি রুজু হয় ২৪ জুলাই ২০২৫, মামলা নম্বর ৬৮, ধারাসমূহ ৪৫৭ ও ৩৮০, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি অনুযায়ী।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আনিসুজ্জামান পিপিএম-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশনায় তদন্তে নামে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ আমির হোসেন এর নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়। দলটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় তল্লাশি ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় তদন্ত কার্যক্রম চালায়।
তদন্তের ধারাবাহিকতায় ২৪ জুলাই ২০২৫, রাত ১১টার দিকে সাভার থানাধীন চামড়া শিল্প নগরী এলাকা থেকে প্রথম আসামি মোঃ রাসেল (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অপর আসামি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৫৮) কে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার নয়াগাঁও থেকে আটক করা হয়। অভিযানে দুই আসামির কাছ থেকে চুরি হওয়া সম্পূর্ণ ১৬ বান্ডেল গবাদিপশুর চামড়া উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে মোট ১৭০টি চামড়া রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন:
১। মোঃ রাসেল (৩৫) – পিতা মোঃ বাহার, স্থায়ী ঠিকানা: খাগুরিয়া, থানা: চন্দ্রগঞ্জ, জেলা: লক্ষ্মীপুর। বর্তমানে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন ঝাউচর উত্তরপাড়া, সাভার, ঢাকা।
২। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৫৮) – পিতা মৃত সিকান্দার আলী, গ্রাম: জাঙ্গালিয়া, থানা: মেহেন্দীগঞ্জ, জেলা: বরিশাল। বর্তমান ঠিকানা: নয়াগাঁও, বাসা নম্বর ৩৬২/২, থানা: কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে চামড়া চুরির সাথে জড়িত এবং এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। চুরি করা চামড়া গোপনে অন্যান্য ফ্যাক্টরি বা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে তারা সরবরাহ করতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও তৎপর হয়ে উঠেছে এবং কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাভার মডেল থানা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের খুঁজে বের করতে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।