ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্মরণে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ দোয়া মাহফিল ও পবিত্র কুরআন খতম। ২৬ জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় পুনাক (পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি), রংপুর মেট্রোপলিটন শাখার উদ্যোগে।
প্রাণবন্ত শিক্ষাঙ্গনটি যে হৃদয়বিদারক বিমানে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে, তাতে দেশের শিক্ষা অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোক। দুর্ঘটনায় অকালপ্রয়াত ছাত্র-ছাত্রী ও সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত সকলে পরম শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় তাদের স্মরণ করেন।
দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন পুনাক, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সভানেত্রী জনাব মাহমুদা হোসেন। তিনি বলেন, “এই দুর্ঘটনা আমাদের হৃদয়কে ছিন্নভিন্ন করেছে। আমরা যারা জীবিত, তাদের দায়িত্ব এখন আরও বেশি—এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আমাদের সন্তানদের নিরাপদ ও সহানুভূতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা।”
পবিত্র কুরআন খতমের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ আয়োজন ছিল অত্যন্ত গাম্ভীর্যপূর্ণ ও আবেগঘন। দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, পুনাক সদস্যবৃন্দ, নিহতদের পরিবারের সদস্য, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ।
বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে নিহতদের আত্মার শান্তি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা সকল শহীদের জন্য দোয়া করেন এবং মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন যেন তিনি তাদের জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করেন।
উল্লেখ্য, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই বিমানে দুর্ঘটনাটি জাতীয়ভাবে শোকাবহ এক অধ্যায় হয়ে উঠেছে। অপ্রত্যাশিত এই দুর্ঘটনা শুধু প্রতিষ্ঠানটিই নয়, বরং গোটা জাতিকে শোকাহত করেছে। শিক্ষার আলো ছড়ানো কিছু কণ্ঠ আজ চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আদর্শবান পথনির্দেশনা ও ছাত্র-ছাত্রীদের নিষ্পাপ মুখগুলো আজ স্মৃতির পাতায় অমর হয়ে থাকবে।
মাহফিলে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। এই দুঃখজনক ক্ষতি পূরণ হবার নয়। তবে এমন মানবিক উদ্যোগ কিছুটা হলেও মানসিক প্রশান্তি এনে দেয় শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর জন্য।
দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিশ্চিত করা হয়।
সর্বশেষে, আল্লাহর কাছে সমবেতভাবে দোয়া করা হয়—”হে আল্লাহ, আমাদের সন্তানদের, আমাদের শিক্ষকদের তুমি জান্নাতবাসী করো। তাদের পরিবারকে তুমি ধৈর্য দাও, আর আহতদের দ্রুত আরোগ্য দান করো। আমিন।”
Leave a Reply