সোহেল রানা মাসুদ, ক্রাইম এডিশন
লালমনিরহাটে মাদকের বিরুদ্ধে চলমান আইনি অভিযানে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে জেলা পুলিশ। আজ ০৪ আগস্ট ২০২৫ ইং, লালমনিরহাটের একটি আদালত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা একটি মামলার রায় প্রদান করেন। রায়ে অভিযুক্ত একজন মাদক ব্যবসায়ীকে ১০ (দশ) বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, আসামি মোঃ জসিম উদ্দিন (২৪) নামের এক যুবককে পূর্বে লালমনিরহাট জেলা পুলিশের একটি অভিযানিক দল নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার করে। মামলাটি দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের পেশ করা উপযুক্ত প্রমাণ ও যুক্তির ভিত্তিতে আদালত আজ এ রায় প্রদান করেন।
রায়ের বিবরণ অনুযায়ী, বিজ্ঞ বিচারক অভিযুক্ত মোঃ জসিম উদ্দিনকে ১০ (দশ) বছর সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ (ছয়) মাসের অতিরিক্ত সশ্রম কারাদণ্ডও তার বিরুদ্ধে কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
আইনি বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, যা ভবিষ্যতে অন্য মাদক কারবারিদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে। মাদকের কুফল সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করার পাশাপাশি, এই রায় দেশের প্রচলিত আইন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়াবে বলেও অভিমত প্রকাশ করেন স্থানীয় সচেতন মহল।
মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত
লালমনিরহাট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তাদের অভিযান নিয়মিতভাবে চলমান রয়েছে। মাদকের করাল ছায়া থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করতে এবং সমাজে মাদকবিরোধী মানসিকতা গড়ে তুলতেই এ অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, কোনো অপরাধী যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, অপরাধ করলে আইনের আওতায় আনা হবে এবং আইনানুগ সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, "আমরা মাদকের বিরুদ্ধে 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করেছি। জনগণের সহায়তা ও তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা অধিক কার্যকরভাবে অভিযান পরিচালনা করতে পারি। তাই সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করবো, আপনারা মাদকের তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করুন।"
সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির জোর দাবি ওঠেছে। স্কুল, কলেজ ও সামাজিক সংগঠনগুলোতে মাদকের কুফল ও প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদক কেবল ব্যক্তি নয়, পুরো পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। তাই প্রতিটি নাগরিকের উচিত, নিজের পরিবার ও আশেপাশের পরিবেশকে মাদকমুক্ত রাখতে সচেষ্ট হওয়া। তরুণ সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে পারলেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
মাদক একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি, যা প্রতিরোধে প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা। এই ধরনের রায় সমাজে ইতিবাচক বার্তা বহন করে এবং অপরাধীদের জন্য সতর্ক সংকেত হিসেবে কাজ করে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষেরই দায়িত্ব রয়েছে।
সবার প্রতি আহ্বান—
মাদককে না বলুন, সমাজকে রক্ষা করুন।
পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন।
আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর আস্থা রাখুন।