ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
বগুড়া, ১৩ আগস্ট ২০২৫ (বুধবার) হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া রিজিয়নের উদ্যোগে বগুড়া রিজিয়ন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ, পেশাগত উন্নয়ন এবং অপরাধ দমন কার্যক্রম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার, উত্তরা, ঢাকা’র মাননীয় ডিআইজি (অপারেশন-পশ্চিম) জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ। তিনি উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং জনসেবামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার জনাব মোঃ শহিদুল্লাহ উল্লাহ, যিনি সম্প্রতি অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, হাইওয়ে পুলিশের মূল দায়িত্ব শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং সড়ক নিরাপত্তা, অপরাধ দমন এবং জনসাধারণের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা।
এই সভায় রিজিয়নের অন্তর্গত সব থানার অফিসার, অফিসার ইনচার্জ (ওসি), বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কল্যাণ সভায় পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণমূলক বিষয়াদি যেমন — বাসস্থানের মান উন্নয়ন, চিকিৎসা সুবিধা, ছুটি, প্রশিক্ষণ সুযোগ বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ এবং কর্মস্থলের পরিবেশ উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রধান অতিথি মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে টিমওয়ার্কের বিকল্প নেই। তিনি নির্দেশ দেন, প্রতিটি সদস্য যেন সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার সাথে কর্তব্য পালন করেন এবং জনগণের আস্থা অর্জন করেন। এছাড়া, প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
অপরাধ সভায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের কার্যকর কৌশল
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা
অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ
মালবাহী যানবাহনের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিতকরণ
ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে সমন্বিত অভিযান
রাত্রীকালীন টহল বৃদ্ধি
চেকপোস্ট কার্যক্রমের মানোন্নয়ন
সভায় জানানো হয়, দুর্ঘটনা কমাতে নির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হবে। পাশাপাশি, অবৈধ যানবাহন ও কাগজপত্রবিহীন পরিবহন নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত চেকপোস্ট কার্যক্রম চালানো হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কেবল পুলিশের দায়িত্ব নয়, বরং চালক, যাত্রী ও সাধারণ মানুষেরও দায়িত্ব রয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্ঘটনা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া সভায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। পুলিশের নতুন সদস্যদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ সদস্যদেরও আধুনিক প্রযুক্তি, আইন প্রয়োগের কৌশল এবং জনসেবামুখী আচরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে উপস্থিত কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেন, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে হাইওয়ে নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে এবং জনসাধারণ নিরাপদভাবে সড়ক ব্যবহার করতে পারবে।