ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
২০২৫ সালের জুন মাসে ঘোষিত ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ ১৪ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়েছে নিয়োগের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। সকাল ৮টা থেকেই ঢাকা জেলাস্থ মিলব্যারাক পুলিশ লাইনসের বিস্তীর্ণ মাঠে শুরু হয় শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ের নানা ধাপ। এদিনে প্রার্থীদের শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল দৌড়, পুশআপ, লংজাম্প এবং হাইজাম্প প্রতিযোগিতা।
ঢাকা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আনিসুজ্জামান পিপিএম মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ কার্যক্রম সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়। তিনি নিয়োগ বোর্ডের প্রধান হিসেবে সরাসরি মাঠে উপস্থিত থেকে পুরো প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করেন। প্রার্থীদের উৎসাহ জোগাতে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আনিসুজ্জামান পিপিএম মহোদয় বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের মধ্য থেকে সেরা জনবল নিয়োগে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি প্রার্থীদের সততা, শৃঙ্খলা ও জনসেবার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরণের অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব বা অযাচিত প্রভাবের সুযোগ থাকবে না বলে তিনি দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন।
এদিনের শারীরিক সক্ষমতা যাচাইয়ে অংশ নেন ঢাকা জেলার বিভিন্ন উপজেলার অসংখ্য তরুণ-তরুণী। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এই কার্যক্রমে প্রতিটি ধাপ ছিল কঠোর নিয়ম ও মানদণ্ডের আওতায়। দৌড় পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্ধারিত দূরত্ব অতিক্রম করেন। পুশআপ পর্বে শারীরিক শক্তি ও সহনশীলতা যাচাই করা হয়, আর লংজাম্প ও হাইজাম্পে অংশগ্রহণকারীদের ফুর্তি, গতি ও সমন্বয় ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়।
মাঠজুড়ে ছিল প্রার্থীদের উদ্দীপনা ও সাফল্যের দৃঢ় প্রত্যয়। কেউ কেউ পরীক্ষার নির্ধারিত ধাপ সফলভাবে শেষ করে আনন্দ প্রকাশ করেন, আবার কেউ কেউ কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। তবে সবার মাঝেই ছিল ভবিষ্যতে আরও ভালো করার অঙ্গীকার।
ঢাকা জেলার এই নিয়োগ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, ঢাকা জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসার ফোর্স। পুরো প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার এই ধাপ শেষ হলে পরবর্তী ধাপে বাছাই করা প্রার্থীদেরকে লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিক সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হবে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরা বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল হিসেবে যোগদানের সুযোগ পাবেন।
ঢাকা জেলার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, ন্যায্য ও দুর্নীতিমুক্তভাবে পরিচালিত হবে। প্রার্থীদের দক্ষতা, শারীরিক সক্ষমতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতেই নির্বাচন করা হবে।
ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে যোগ দিতে আগ্রহীরা পূর্বেই নির্ধারিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদন করেছিলেন এবং নির্দিষ্ট তারিখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মিলব্যারাক পুলিশ লাইনসে উপস্থিত হন। নিয়োগের এই ধাপে প্রার্থীদের শারীরিক সক্ষমতা যাচাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ পুলিশ বাহিনীতে কাজ করতে শারীরিকভাবে সুস্থ ও ফিট থাকা আবশ্যক।
দ্বিতীয় দিনের এই সফল কর্মযজ্ঞ শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাকি ধাপগুলো ধারাবাহিকভাবে সম্পন্ন হবে। ঢাকা জেলার তরুণ প্রজন্মের জন্য এই সুযোগকে একটি গৌরবময় ও সম্মানজনক পথ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা তাদেরকে দেশ ও জনগণের সেবা করার সুযোগ এনে দেবে।