ক্রাইম এডিশন, অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ পুলিশের মহৎ অঙ্গীকার ‘সেবার ব্রতে চাকরি’— এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শেরপুর জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ কার্যক্রমের প্রথম দিন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ১৭ আগস্ট ২০২৫ ইং রবিবার সকাল ৮টা থেকে পুলিশ লাইন্স মাঠে জেলার প্রার্থীদের শারীরিক মাপজোক ও কাগজপত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
প্রথম দিনের কার্যক্রমে শেরপুর জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হিসেবে সার্বিক তদারকি করেন। তিনি মাঠে উপস্থিত থেকে প্রতিটি ধাপ পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রার্থীদের উৎসাহিত করেন।
এ সময় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটিইউ’র পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল, পিপিএম এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম মেট্রো) জনাব ফাহিমা কাদের চৌধুরী।
টিআরসি নিয়োগ বোর্ডের সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ময়মনসিংহ সদর সার্কেল) মোঃ সোহরোয়ার্দী হোসেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জামালপুর সদর সার্কেল) ইয়াহিয়া আল মামুন। এছাড়াও শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শাহ শিবলী সাদিক, মেডিকেল অফিসার ডাঃ শিবলী সামিউল তুষারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম দিনের কার্যক্রম
নিয়োগের প্রথম ধাপে শারীরিক মাপ ও কাগজপত্র যাচাই প্রক্রিয়ায় শত শত প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্রার্থীদের সারি দীর্ঘ হলেও কাজ চলে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে। প্রতিটি প্রার্থীর উচ্চতা, বুকের মাপ, ওজন, দৃষ্টি, এবং কাগজপত্র সঠিকভাবে মিলিয়ে দেখা হয়। এই ধাপ উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী ধাপে অংশ নেওয়ার সুযোগ মিলবে।
পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন,
"প্রার্থীরা অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। প্রথম দিনে উত্তীর্ণ সবাইকে অভিনন্দন জানাই। আগামী দিনের পরীক্ষার জন্য সবাইকে প্রস্তুত হয়ে যথাসময়ে মাঠে উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ করছি।"
আগামী দিনের পরীক্ষা
নিয়োগ কার্যক্রমের দ্বিতীয় ধাপে প্রার্থীদের নিতে হবে শারীরিক সক্ষমতার কঠিন পরীক্ষা। আগামী ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে পুলিশ লাইন্স মাঠে অনুষ্ঠিত হবে Physical Endurance Test (PET)। এতে থাকছে চারটি ইভেন্ট—
১. ২০০ মিটার দৌড়
২. পুশ-আপ
৩. লং জাম্প
৪. হাই জাম্প
এই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের ফিটনেস যাচাই করা হবে। PET উত্তীর্ণ হওয়ার পরপরই প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া
বাংলাদেশ পুলিশ বহুদিন ধরেই কনস্টেবল নিয়োগে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতাভিত্তিক প্রক্রিয়া চালু রেখেছে। এবারও একই ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। কোনো প্রকার তদবির, আর্থিক লেনদেন বা অনৈতিক প্রভাব যাতে কাজ না করে সে বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন কঠোর নজরদারিতে রয়েছে।
জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়,
"এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক। যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীরাই উত্তীর্ণ হবে।"
প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা
প্রথম দিনের কার্যক্রমে উপস্থিত অনেক প্রার্থী জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া খুবই সহজ ও স্বচ্ছ মনে হয়েছে। প্রার্থীরা স্বাভাবিকভাবে শারীরিক মাপজোক ও কাগজপত্র যাচাই সম্পন্ন করতে পেরেছেন। একাধিক প্রার্থী বলেন,
"আমরা আশা করি কোনো অন্যায় প্রভাব ছাড়াই মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চূড়ান্ত নির্বাচন হবে।"
নিয়োগ প্রক্রিয়ার তাৎপর্য
বাংলাদেশ পুলিশের মূল লক্ষ্য হলো জনগণের সেবা করা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মের যোগ্য যুবকদের অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
শেরপুরে নিয়োগ কার্যক্রমের প্রথম দিন যেভাবে শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে, তাতে আশা করা যায় পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই সফলভাবে শেষ হবে এবং যোগ্য প্রার্থীরাই বাংলাদেশ পুলিশে অন্তর্ভুক্ত হবেন।