ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার জেলায় প্রাথমিক ধাপের বাছাই কার্যক্রম আজ ২২ আগস্ট ২০২৫ ইং শেষ হয়েছে। শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই এবং শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মোট ৩৪৭ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
লিখিত পরীক্ষার তারিখ ও স্থান
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার পুলিশ লাইন্স মাঠে নির্বাচিত প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল থেকে দিনব্যাপী এ পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। লিখিত পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন, তাদের পরবর্তী ধাপে মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এ পর্যায় শেষে ১৮ সেপ্টেম্বর চূড়ান্তভাবে নিয়োগযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
শারীরিক পরীক্ষার ধাপ ও ফলাফল
২২ আগস্ট সকাল ৮টায় মৌলভীবাজার পুলিশ লাইন্স মাঠে শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৬০০ মিটার দৌড়, ড্র্যাগিং এবং রোপ ক্লাইম্বিং-এর মতো ধাপ অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরীক্ষায় যারা দক্ষতা প্রমাণ করতে পেরেছেন, তারাই লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তিনি বলেন, "শৃঙ্খলাবদ্ধ ও যোগ্য প্রার্থীদের মধ্য থেকেই কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও ন্যায়সংগতভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে।"
নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতি
শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষার সময় নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিলেট) মোঃ রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুনামগঞ্জ) জাকির হোসাইন এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন।
এছাড়াও মৌলভীবাজার জেলায় কর্মরত একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে কার্যক্রম তদারকি করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আসিফ মহিউদ্দীন, পিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, পিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মোঃ আজমল হোসেন; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল খয়ের এবং সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) আনিসুর রহমান। পাশাপাশি নিয়োগ কার্যক্রমে নিযুক্ত মেডিকেল অফিসার ও পুলিশ সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করেন।
স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আশাবাদ
প্রার্থীদের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। টিআরসি পদে নিয়োগ পেলে তরুণরা শুধু চাকরিই পাবেন না, বরং দেশের সেবা করার সুযোগও অর্জন করবেন। স্থানীয় অভিভাবক ও প্রার্থীরা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখে আশাবাদী হয়েছেন। তারা মনে করছেন, যোগ্যতাই হবে নির্বাচনের মূল ভিত্তি।
লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
আগামী লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত প্রার্থীরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা প্রতিযোগীরা একে অপরের সাথে মতবিনিময় করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চূড়ান্ত নিয়োগের অপেক্ষায় প্রার্থীরা
শারীরিক ও লিখিত পরীক্ষার প্রতিযোগিতা শেষে যারা শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবেন, তাদের জীবন-যাত্রায় বড় পরিবর্তন আসবে। এ চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া মানে একটি স্থায়ী আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন এবং দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অবদান রাখার সুযোগ।
প্রার্থীদের একাংশ জানিয়েছেন, পরিবারে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন দূর করার স্বপ্ন নিয়েই তারা টিআরসি নিয়োগে অংশ নিয়েছেন। অন্যদিকে অনেকেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হয়ে জনগণের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন।
সমাপনী কথা
মৌলভীবাজার জেলায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগের প্রাথমিক ধাপ শেষ হয়েছে সফলভাবে। এখন নজর সবার লিখিত পরীক্ষায়। সেখান থেকে উত্তীর্ণরাই আগামী ধাপে প্রবেশ করবেন। আর শেষ পর্যন্ত যারা নির্বাচিত হবেন, তারা পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।