ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায় ছয় বছর বয়সী সামিরা খাতুন নামের একটি শিশুকে খুঁজে পেতে পরিবারসহ স্থানীয়রা মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট ২০২৫) বিকেল প্রায় ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে নিখোঁজ হওয়া এ ঘটনাটি এলাকাজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, সামিরা খাতুন তার কাকা নসুরোল্লার চায়ের দোকানে ঘুঘরাকাটি বাজারে গিয়েছিল। তবে সেখান থেকে আর বাড়িতে ফেরেনি। পরবর্তীতে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির কোনো সন্ধান পাননি।
পরিবারের উদ্বেগ ও স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
নিখোঁজ হওয়ার খবর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজনও পরিবারকে সহায়তা করে শিশুটিকে খোঁজার চেষ্টা চালান। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি, বাজার এবং আশপাশের সম্ভাব্য স্থানগুলোতে তল্লাশি চালানো হলেও শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুর মা-বাবা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
সামিরার পিতা মোঃ শাহ আলম গাতীদার এবং মাতা বিলকিস বেগম তাদের একমাত্র কন্যার নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন। তারা বলেছেন, “আমরা সবার কাছে অনুরোধ করছি, যদি কেউ আমাদের মেয়ের খোঁজ পান তবে দয়া করে দ্রুত আমাদের জানাবেন অথবা থানায় যোগাযোগ করবেন।”
পুলিশের পদক্ষেপ
নিখোঁজ হওয়ার পরপরই পরিবার কয়রা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এ বিষয়ে কয়রা থানায় জিডি নং-১১৪৫, তারিখ ২৭ আগস্ট ২০২৫, লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন শিশুটিকে খুঁজে বের করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কয়রা থানার ওসি এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা এলাকায় খোঁজখবর চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে পুলিশ সাধারণ মানুষকেও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে। কেউ যদি সামিরা খাতুনের সন্ধান পান তবে তাৎক্ষণিকভাবে থানায় জানাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
যোগাযোগের নম্বর
কয়রা থানার পক্ষ থেকে যোগাযোগের জন্য বিশেষ নম্বরও প্রকাশ করা হয়েছে—
অফিসার ইনচার্জ (ওসি): ০১৩২০-১৪০৩৮৯
ডিউটি অফিসার: ০১৩২০-১৪০৩৯৪
সমাজের সহযোগিতার আহ্বান
এমন ঘটনায় স্থানীয় সমাজকর্মী ও সচেতন মানুষজনও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর সবাই মিলে দ্রুত খুঁজে বের করার উদ্যোগ গ্রহণ করা এখন সবচেয়ে জরুরি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শিশুটির ছবি ও তথ্য শেয়ার করে দিচ্ছেন, যাতে দ্রুত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের ধারণা, শিশুটি হয়তো অসাবধানতাবশত কোথাও চলে গেছে অথবা কারো সাথে অচেনা জায়গায় চলে গেছে। তবে পুলিশ বলছে, সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শিশু নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনায় পরিবারসহ সমাজের সবাইকে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও সচেতন হতে হবে। বাজার, হাট বা জনসমাগমস্থলে শিশুদের একা না পাঠানোই ভালো। একইসাথে শিশুদের শেখানো প্রয়োজন অপরিচিত কারো সাথে যেন কোথাও না যায় এবং জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে সাহায্য চাইতে হয়।
সবার উদ্দেশ্যে বার্তা
শিশু সামিরা খাতুনের সন্ধান পেতে পরিবার, স্থানীয় লোকজন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় যার কাছে কোনো তথ্য আছে, তাদের প্রতি অনুরোধ দয়া করে বিলম্ব না করে কয়রা থানায় যোগাযোগ করুন।
সবশেষে বলা যায়, একটি ছোট্ট শিশুর নিরাপদে ফিরে আসা কেবল একটি পরিবারের স্বস্তির বিষয় নয়; এটি পুরো সমাজের জন্যও স্বস্তি ও আনন্দের ব্যাপার। তাই এ মুহূর্তে সবার সহযোগিতা একান্তভাবে জরুরি।