লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দৈনিক জনতার জমিন পত্রিকার লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি এস তাবাসসুম রায়হান তামান্না মুসতাযীর নানা চাপ ও প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছেন।
অনিয়মের অভিযোগ
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের দুহুলি-জোরগাছ জিসি সড়ক এবং চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বুড়িরহাট-চন্দ্রপুর সড়কের সংস্কার কাজে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা চলছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার যোগসাজশে অবৈধভাবে সড়ক খনন ও দখলদারিত্বের অভিযোগ ওঠে। কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও চুক্তি সম্পন্ন না হওয়ায় ঠিকাদাররা কাজ শুরু করতে পারেননি, অথচ অন্যপক্ষ অবৈধভাবে রাস্তার কাজ শুরু করে জনগণকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে।
ইউএনওর বৈঠক
এস তাবাসসুম রায়হান তামান্না মুসতাযীর তার ফেসবুকে পোস্ট করেন গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং দৈনিক জনতার জমিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা স্থানীয় প্রেসক্লাবের কয়েকজন সাংবাদিককে নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু এবং তাবাসসুম রায়হান তামান্না মুসতাযীরের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়।
ফোনে চাপ
এস তাবাসসুম রায়হান তামান্না মুসতাযীর আরো লেখেন অন্তত ১০ জন স্থানীয় সাংবাদিক তাকে ফোন করে জানতে চেয়েছেন—“এ ধরনের নিউজ করার আগে কেন আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি?” কেউ কেউ আরও বলেছেন, “পরেরবার প্রতিবেদন প্রকাশের আগে জানাতে হবে।”
প্রতিবেদকের প্রতিক্রিয়া
তাবাসসুম রায়হান তামান্না মুসতাযীর বলেন,
“সংবাদ প্রকাশের আগে কাউকে জানানো বা অনুমতি নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। এটি আমার স্বাধীন সাংবাদিকতার অধিকার। জনগণের জানার অধিকার রক্ষার স্বার্থে আমি এই প্রতিবেদন করেছি।”
তিনি আরও জানান, তার কাছে থাকা সব প্রমাণ ও নথি নিরাপদে সংরক্ষিত আছে এবং প্রয়োজনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
স্বাধীন সাংবাদিকতার বিষয়
তিনি প্রশ্ন তোলেন,
“একজন সাংবাদিক যখন অন্যায়, অনিয়ম বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করবেন, তখন কিসের ভিত্তিতে অন্য সাংবাদিকের অনুমতি নিতে হবে? সাংবাদিকতা জনগণের জানার অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যম, কোনো ব্যক্তিগত অনুমতির বিষয় নয়।”
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সংবাদ প্রকাশের আগে অন্য সাংবাদিকদের অনুমতি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এ ধরনের চাপ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করে এবং জনগণের জানার অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে।
শেষকথা
কালীগঞ্জের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংস্কার কাজ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশের পর থেকে দৈনিক জনতার জমিন পত্রিকার লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি এস তাবাসসুম রায়হান তামান্না মুসতাযীরকে নানা চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন—অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করতে কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই এবং জনগণের জানার অধিকার রক্ষায় তিনি সত্য প্রকাশে অবিচল থাকবেন।