নিজস্ব সংবাদদাতা, নরসিংদী
নরসিংদী জেলা পুলিশ আবারও সফল অভিযানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ চোলাই মদ জব্দ করেছে। গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার রাত ১০টা ৫ মিনিটের দিকে নরসিংদী মডেল থানার আওতাধীন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ডায়াবেটিক্স হাসপাতাল এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে পুলিশ সদস্যরা প্রায় ২৫০ লিটার চোলাই মদ, মাদক বহনকারী একটি মিশুক গাড়ি উদ্ধার এবং দুইজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
পুলিশের তথ্যমতে, মাদক বিরোধী এই বিশেষ অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে চোলাই মদ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের নিকট থেকে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত দুইজনের পরিচয়
গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন—
১। আদালত খা (৪৩), পিতা- জয়নাল মিয়া, ঠিকানা- চন্ডিবের, থানা- ভৈরব, জেলা- কিশোরগঞ্জ।
২। শাহীন মিয়া (৪২), পিতা- কবির মিয়া, ঠিকানা- চন্ডিবের, থানা- ভৈরব, জেলা- কিশোরগঞ্জ।
পুলিশ জানায়, এরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধ মদ সংগ্রহ করে স্থানীয় এলাকায় তা ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত ছিল। এ কারণে এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জমা পড়েছিল।
অভিযানের বিবরণ
রবিবার রাতের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদী জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম ডায়াবেটিক্স হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালায়। সন্দেহজনক একটি মিশুক গাড়ি তল্লাশি করে তারা বিপুল পরিমাণ চোলাই মদ উদ্ধার করে। গাড়ির ভেতর কৌশলে রাখা এই মদ স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
ঘটনার সময় স্থানীয় এলাকাবাসী পুলিশের এ অভিযানের খবরে সমবেত হন। তারা জেলা পুলিশের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এ ধরনের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করলে এলাকায় মাদক ব্যবসার বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে।
পুলিশের বক্তব্য
নরসিংদী জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, “মাদক নির্মূল একটি চলমান প্রক্রিয়া। মাদক ব্যবসায়ীরা যতই গোপন কৌশল অবলম্বন করুক না কেন, পুলিশ তাদের আইনের আওতায় আনবে। এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাদক বিরোধী প্রচেষ্টায় পুলিশের ভূমিকা
সাম্প্রতিক সময়ে নরসিংদী জেলা পুলিশ একাধিকবার মাদকবিরোধী অভিযানে সাফল্য অর্জন করেছে। মাদক সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি— যা শুধু ব্যক্তির নয়, গোটা পরিবার এবং সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। এ কারণে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের দমন করার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তরুণ প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। নরসিংদীসহ সারাদেশে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান সমাজ থেকে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
শেষকথা
নরসিংদীতে ২৫০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার এবং দুইজন মাদক ব্যবসায়ীর গ্রেফতার প্রমাণ করে যে, পুলিশ সর্বদা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সজাগ রয়েছে। এ ধরনের অভিযান শুধু অপরাধীদের দমন নয়, সমাজে একটি ইতিবাচক বার্তাও পৌঁছে দেয়— “অবৈধ কর্মকাণ্ড করে কেউ রেহাই পাবে না।”