ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
লালমনিরহাট জেলায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে তিন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযানে তাদের কাছ থেকে তিন কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, ২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর (রবিবার) রাতে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা থানা পুলিশ একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। মাদকবিরোধী এই অভিযানের সময় হাতীবান্ধা থানাধীন দোয়ানী পিত্তিফাটা মৌজাস্থ তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালায়।
অভিযানের একপর্যায়ে বড়খাতা বাজার থেকে তিস্তা ব্যারেজগামী পাকা সড়কে সন্দেহভাজন তিন ব্যক্তিকে থামানো হয়। তাদের দেহ তল্লাশি ও বহনকৃত ব্যাগ পরীক্ষা করে পুলিশ মোট তিন কেজি গাঁজা উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃত তিন আসামির পরিচয় নিশ্চিত করেছে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ। তারা হলেন—
১. মোঃ আব্দুস সাত্তার (৬০)
২. মোঃ সেলিম হোসেন (২৬)
৩. মোঃ মিন্টু রানা (২৭)
তারা সবাই লালমনিরহাট জেলার স্থানীয় বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
হাতীবান্ধা থানার এক কর্মকর্তা লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সূত্রে আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় মাদক চোরাচালান ও গাঁজা বিক্রির বিরুদ্ধে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। বিশেষ তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতেই অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দোয়ানী এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হয় এবং তিনজনকে গাঁজাসহ হাতে-নাতে আটক করা হয়।
এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন,
> “মাদক সমাজ ও যুব সমাজের জন্য এক ভয়াবহ অভিশাপ। মাদক নির্মূলে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
এদিকে, মাদকবিরোধী অভিযানের এই সফলতাকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও অভিভাবক সমাজ। তারা জানান, এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে মাদক ব্যবসার কারণে কিশোর ও তরুণ প্রজন্ম বিপথগামী হচ্ছে। নিয়মিত এ ধরনের অভিযান চালালে সমাজ থেকে মাদক অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
মাদকবিরোধী কার্যক্রমে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়—
> “মাদককে না বলুন, মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন, এবং পুলিশের কাছে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।”
পুলিশ প্রশাসন জানায়, জেলার প্রতিটি উপজেলায় নিয়মিত টহল ও গোপন অভিযান জোরদার করা হয়েছে। মাদক বিক্রি, সেবন ও পরিবহনের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মাদক নির্মূলে সরকার, প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টাই পারে একটি নিরাপদ সমাজ গড়ে তুলতে। এজন্য পুলিশের পাশাপাশি সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে দেশে মাদকবিরোধী অভিযান আরও তীব্র করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশে প্রতিটি জেলা ও থানা পর্যায়ে মাদকবিরোধী টাস্কফোর্স সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকলে সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসবে বলে স্থানীয় প্রশাসনের বিশ্বাস।
অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশের সদস্যদের আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের প্রশংসা করে লালমনিরহাটের সাধারণ জনগণ জানান, এই সাফল্য জেলা পুলিশের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফল। তারা আরও জানান, এমন কার্যকর অভিযান অব্যাহত থাকলে মাদকচক্রের আস্তানা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়বে এবং নতুন প্রজন্ম নিরাপদ ভবিষ্যৎ পাবে।