ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে ডা. শফিকুর রহমান, যিনি এখন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আমীরে জামায়াত হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ডা. তোফায়েল আহমেদ–এর উত্তরার বাসভবনে উপস্থিত হয়ে তাঁর জীবন ও কর্মের স্মৃতিতে একটি অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটান। ছ’দশক অতিক্রান্ত সম্মানিত জীবনের অধিকারী ডা. তোফায়েল, যিনি শেষ বয়সে আন্তর্বর্তী সরকারের (estimated) অধীনে গঠনকৃত স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁর স্মৃতিবিজড়িত লাইব্রেরি ও পড়ার কক্ষে খানিকটা সময় কাটান আমীরে জামায়াত। তিনি সুপারিশমুখী সেই গ্রন্থটি হাতে নিয়ে গভীর মনোযোগে পড়ছিলেন।
উক্ত সময় ডা. তোফায়েল আহমেদের সহধর্মিনী মাসুদা আক্তার চৌধুরী, একমাত্র কন্যা সাদিয়া আহমেদ এবং নাতনি সাজফা বিনতে সরওয়ার-এর খোঁজখবর নেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সিলেটে প্রতিষ্ঠিত দৈনিক “জালালাবাদ”-এর সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক মুকতাবিস‑উন‑নূর এবং সিলেট জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুল হান্নান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হওয়া ডা. তোফায়েল আহমেদ গত ৮ অক্টোবর রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেন। উনার মৃত্যু সংবাদটি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কাজ ও স্মৃতিচিহ্ন
ডা. তোফায়েল ১৯৫৪ সালের ১ মার্চ চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি ও প্রশাসনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। দীর্ঘ শিক্ষকতা ও গবেষণা জীবনের পাশাপাশি তিনি স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়াম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর ফলে স্থানীয় সুশাসন, ভূমিকা ও উদ্যোগ নিয়ে যে সুপারিশ তিনি রেখে গেছেন, তা এখনো সমালোচনামূলক ভাবনায় আলোচিত। এ-পরিস্থিতিতে আমীরে জামায়াতের এই ভিজিট ও স্মৃতিচারণ, স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
ভিজিটের সময়ের কিছু মুহূর্ত
উত্তরা-এর বাসভবনে হাজির হয়ে আমীরে জামায়াত প্রথমেই পরিচিত হয়ে ওঠেন লাইব্রেরি ও পড়াকক্ষের সঙ্গে — যেখানে ডা. তোফায়েলের জীবনের এক অধ্যায় ধীরে ধীরে ধরা পড়ে আছে: প্রিন্টেড সুপারিশ বই-পুস্তক, গবেষণা নোট, ব্যক্তিগত রেকর্ড ও সঙ্গে-সঙ্গে একাধিক স্মৃতিচিহ্ন। সেখানে তিনি ওই সুপারিশ গ্রন্থটি হাতে নিয়ে পড়ছিলেন এবং উপস্থিত ব্যক্তিদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত অবস্থা-আলাপও করেছেন।
স্মৃতিচিহ্ন ক্যাডার হিসেবে এ-ভ্রমণ ছিল যথেষ্ট হৃদয়স্পর্শী: একজন গবেষক-শিক্ষাবিদের দ্বারা রচিত পরিমিত কাজ ও নীতিমালা-উপস্থাপনা, এবং একজন রাজনৈতিক সংগঠন নেতার তাৎক্ষণিক শ্রদ্ধা ও সংবেদনশীলতার মিশ্রণ।
উক্ত সময় উপস্থিত বাদ্য কিছু কথাবার্তা:
আমীরে জামায়াত বলেন, “এই গ্রন্থটি আমার কাছে শুধু গবেষণাতত্ত্ব নয় — এটা দেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কারে একটি সহায়ক নকশা।”
কন্যা সাদিয়া আহমেদ বলেন, “বাবা সবসময় বলতেন- ‘যেকোনো কর্মই ছোট হোক বা বড়, তার প্রভাব থাকে’ । আজ এখানে আপনারা এসে তা মনে করিয়ে দিলেন।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুকতাবিস-উন-নূর ও অধ্যাপক আব্দুল হান্নান উভয়েই জানান, এ ধরনের সংবেদনশীল ভিজিট রাজনৈতিক-সামাজিক ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
প্রাসঙ্গিক ভাবনা
এই ভিজিটটি শুধুই নজির নয় — এটি নির্দেশ করে যে সক্রিয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নেতৃত্ব গবেষক-গবেষণা ও নীতিমূলক উপস্থাপনা-এর প্রতি মূল্যায়ন রাখে। বিশেষ করে দেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সংস্কার এখনো একটি চ্যালেঞ্জ; এমন সময়, একজন নির্ভরযোগ্য বিশেষজ্ঞের স্মৃতিভিত্তিক পরিদর্শন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া, ভিজিটের মাধ্যমে উপস্থাপিত সংলাপ ও সংবেদনশীলতা পরবর্তীতে ছোট-বড় বিভিন্ন শুরু-প্রকল্পে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে। যেমন- স্থানীয় কর্মী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সুশাসন সংক্রান্ত গবেষণা ও এনজিও উদ্যোগ এসব ক্ষেত্রে নতুন ভাবনায় এগিয়ে যেতে পারে।
সমাপনীকথা
সরকারি বরাবর অথবা রাজনৈতিক সংগঠন-উপস্থিত এই ধরনের ঘনিষ্ঠ স্মৃতিচারণ ও সংবেদনশীল ভিজিট একটি সংস্কারমূলক পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক। গতকাল শনিবার উত্তরার বাসভবনে অনুষ্ঠিত ভিজিট-সূচি তাই শুধু সৌজন্য রূপ নয়, বরং গবেষণা-নীতিমূলক এক স্মৃতিসেতু হিসেবেও দেখাচ্ছে। আগামী দিনে আশা করা যায়, এই ধরনের সংবেদনশীল উদ্যোগ স্থানীয় সরকার ও সুশাসন সংস্কারে গভীর প্রভাব ফেলবে।