ক্রাইম এডিশন, অনলাইন ডেস্ক
জামালপুর সদর থানার পুলিশ ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ইং শুক্রবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২২,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। অভিযানে দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা যায়, এই বিপুল পরিমাণ ইয়াবা কক্সবাজার থেকে বাসে যাত্রীবেশে জারী করা হচ্ছিল।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নবনিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাজমুস সাকিবের নেতৃত্বে জামালপুর সদর থানা বিশেষ তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ সোহেল মাহমুদ পিপিএম-এর নির্দেশে অভিযানটি কার্যকর করা হয়।
অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এসআই (নিঃ) মোঃ শহিদুল ইসলাম, এসআই (নিঃ) সাইফুল ইসলাম, এএসআই (নিঃ) আকরাম হোসেন এবং কং/ মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও নারী কনস্টেবল ফাতেমা আক্তার, মোছাঃ সাবিনা ইয়াসমিন, মুক্তা আক্তার ও শ্রাবণী আক্তার তল্লাশিতে সহায়তা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের সময় বাসটি জামালপুর সদর থানাধীন দড়িপাড়া এলাকার মেসার্স স্নিগ্ধা মোটরসের সামনের রাস্তায় থামানো হয়। তল্লাশির সময় দুইজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২২,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৬৬ লক্ষ টাকা।
গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় জানা যায়: মোঃ আব্দুল মতিন (৪৭), পিতা-মৃত হাসমত আলী, স্থায়ী ঠিকানা ডিগ্রীরচর পশ্চিমপাড়া, জামালপুর সদর থানা; এবং তার স্ত্রী মোছাঃ শাহিদা বেগম (৩৫), পিতা-মোঃ আব্দুল সামাদ, স্থায়ী ঠিকানা গ্রাম নুরুন্দি, ডিগ্রীরচর, জামালপুর সদর থানা। পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রী মিলে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।
জামালপুর জেলার পুলিশ সুপার জনাব সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম-সেবা বলেন, “অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাজমুস সাকিবের নেতৃত্বে এই অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের পেশাদারিত্ব এবং দ্রুত পদক্ষেপের ফলে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এটি জামালপুর জেলা পুলিশের জন্য উল্লেখযোগ্য সাফল্য। আমাদের লক্ষ্য মাদক নির্মূলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা এবং জেলা থেকে মাদক সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা।”
এই অভিযান স্থানীয় জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। স্থানীয়রা মনে করেন, মাদক ব্যবসা শুধু অপরাধ নয়, এটি সমাজে বিশৃঙ্খলা এবং যুবসমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। তাই পুলিশের তৎপরতা এবং স্বচ্ছ অভিযান সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারি নিয়ম ও আইন অনুযায়ী মাদকদ্রব্যের তৎপর নজরদারি এবং গোপন তথ্যভিত্তিক অভিযানই মাদক ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম কমাতে পারে। পুলিশ যখন দ্রুত এবং দক্ষ নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে, তখন সাধারণ জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা অনুভূতি বৃদ্ধি পায়।
জামালপুর জেলা পুলিশের এই অভিযান দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্যও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এতে প্রমাণ হয়, সরকারি সংস্থাগুলি দক্ষ পরিকল্পনা এবং তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপ নিলে মাদক ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম সীমিত করা সম্ভব।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ মামলা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও, তাদের কাছ থেকে অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে মাদক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন এবং জনসাধারণ আশা করছেন, এ ধরনের অভিযান ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে মাদক নির্মূল কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা হবে।
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাদক কেবল একটি অপরাধ নয়, এটি সমাজের জন্য মহামারীস্বরূপ। তাই জামালপুর জেলা পুলিশ মাদক নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।