ক্রাইম এডিশন, অনলাইন ডেস্ক:
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের দুই ছাত্র প্রতিনিধি, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সরকারের উচ্চপদস্থ সূত্র জানিয়েছে, তারা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
জুলাই ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় এই দুই ছাত্র নেতা সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচিত হন। মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন, আসিফ মাহমুদ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
৫ আগস্ট ২০২৪ সালে বর্তমান সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই সময় উপদেষ্টা পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা সহ ২৩ জন সদস্য ছিলেন। এদের মধ্যে তিনজন ছিলেন ছাত্র প্রতিনিধি। আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে তাদের পদত্যাগের বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদের কিছু সদস্য গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই দুই ছাত্র প্রতিনিধিকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছিলেন, তবে তারা আরও সময় চেয়েছিলেন।
প্রথমে মাহফুজ আলম জানান, তিনি সরকারের শেষ সময় পর্যন্ত থাকতে আগ্রহী, তবে পরবর্তীতে নির্বাচনে অংশ নেবেন না। কিন্তু গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের পুনরায় তাগাদা দেওয়া হয় এবং অবশেষে তারা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। সরকারের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, তপশিল ঘোষণার পর এই দুই ছাত্র প্রতিনিধির সরকারে থাকা উপযুক্ত নয়।
এই পদত্যাগের ফলে উপদেষ্টা পরিষদের কাঠামোয় পরিবর্তন আসছে। উল্লেখযোগ্য, আসিফ মাহমুদ শুরুতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন, পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পান। মাহফুজ আলম প্রথমে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য ছিল দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিশ্চিত করা। দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ প্রশাসনিক দায়িত্ব ও নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারের সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রমে নতুন পরিকল্পনা ও সমন্বয় আরও দৃঢ় করা হবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ছাত্র নেতাদের পদত্যাগ নতুন দিক নির্দেশনার সূচনা করতে পারে। সরকারের উচ্চপর্যায় বিষয়টি মনিটর করছে, এবং আগামী দিনে উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা ও সমন্বয় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।