ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি সাদিক কায়েম ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় সরকারের প্রতি ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছেন। তিনি দাবি করেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে কঠোর রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচির দিকে যেতে বাধ্য হবেন তারা।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, হামলার ঘটনার পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান শুরু করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সাদিক কায়েমের ভাষ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব স্তরের সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে। একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি। সরকারের কোনো ধরনের গাফিলতি বা বিলম্ব আর গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেন ডাকসু ভিপি।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করতে হলে খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রদত্ত রায় কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্তদের আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে মূল্যায়নের দাবি জানান তিনি। অভিযুক্তদের প্রত্যর্পণ না হওয়া পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন সাদিক কায়েম।
ডাকসু ভিপি বলেন, হাদির ওপর হামলার ঘটনায় শুধু সরাসরি হামলাকারী নয়, বরং এর নেপথ্যে থাকা পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারীদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ রাষ্ট্রের সব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে এবং যাদের দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আরও দাবি করেন, যারা প্রকাশ্যে বা পরোক্ষভাবে এই হামলাকে সমর্থন দিয়েছে কিংবা হাদি ও জুলাই আন্দোলনের কর্মীদের হত্যাযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছে, তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করতে হবে। এ ধরনের ‘কালচারাল ফ্যাসিবাদ’ সমাজের জন্য মারাত্মক হুমকি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সাদিক কায়েম ও তার সঙ্গে থাকা প্রতিনিধিদলের উত্থাপিত দাবিগুলো যৌক্তিক। সরকার এসব দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ওসমান হাদি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সরকার নিয়মিত খোঁজখবর রাখছে। তিনি দেশবাসীর কাছে হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।