ক্রাইম এডিশন ডেস্ক।
আগামী ২৭ মে মঙ্গলবার জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বহুল প্রতীক্ষিত এ সফরকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা, যা আগামী দিনে কৌশলগত ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এই সফরে জাপান সরকার বাংলাদেশের জন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট সহায়তা ঘোষণা করতে পারে। যা দেশের অর্থনীতিতে একটি বড় ধরনের অবদান রাখতে সক্ষম হবে। সফরটি সমন্বয় করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
টোকিও যাত্রা ও কর্মসূচি
প্রধান উপদেষ্টা ২৭ মে দিবাগত রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টোকিওর উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। সফরের তৃতীয় দিন অর্থাৎ ২৯ মে তিনি টোকিওতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘নিক্কেই ফোরাম’-এ অংশ নেবেন। এ সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক সহায়তা নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরদিন ৩০ মে তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। এই বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক এবং চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।
সম্ভাব্য চুক্তি ও সহযোগিতা
সূত্র জানায়, যে পাঁচটি খাতে সহযোগিতা হতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে—
প্রতিরক্ষা খাতে পারস্পরিক সমঝোতা
অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি বিনিয়োগ
জ্বালানি খাতে প্রযুক্তিগত সহায়তা
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-র সক্ষমতা বৃদ্ধি
জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাপানের সঙ্গে আরও গভীর কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে জ্বালানি ও মানবসম্পদ খাতে জাপানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কূটনৈতিক বাস্তবতা
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সময় এ সফরটি হতে যাচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজনের কারণে প্রধান উপদেষ্টার এই সফর আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ইতিবাচক অবস্থানকে জোরদার করতে সহায়ক হবে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
পূর্ব অভিজ্ঞতা ও সম্ভাবনা
বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক বরাবরই বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক। এর আগে জাপান বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য খাত এবং শিক্ষা খাতে বহু প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। এবারের সফরে সেই সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজেট সহায়তার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ও বিনিয়োগে নতুন মাত্রা যোগ হলে আগামীতে এই সহযোগিতা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply