ক্রাইম এডিশন। অনলাইন ডেস্ক।
রাজধানীর মুগদা থানা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে ৪০ কেজি গাঁজা, একটি পিকআপভ্যানসহ তিন মাদক কারবারিকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ। অভিযুক্তরা হলেন—মোঃ নাজমুল ইসলাম ভুঁইয়া (২৫), মোঃ শিমুল (৫৯) এবং মোঃ রুবেল মিয়া (২৪)।
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ তারিখ রাত আনুমানিক ৮টার দিকে মুগদার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের বিপরীতে পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার অফিসের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি পিকআপভ্যানসহ বিপুল পরিমাণ গাঁজা জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত গাঁজার ওজন ৪০ কেজি এবং বাজারমূল্য আনুমানিক ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ডিবি সূত্র।
ডিবির একাধিক কর্মকর্তার বরাতে জানা যায়, রাজধানীতে মাদকবিরোধী একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন যে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করছে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের সামনে। দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি বিশেষ দল গঠন করে সেখানে অভিযান চালানো হয় এবং ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গাঁজা সংগ্রহ করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিল। তাদের কার্যক্রম ছিল বেশ সংগঠিত ও ছদ্মবেশে পরিচালিত, যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ এড়িয়ে চলা যায়। তবে এবারের অভিযানে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করায় তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে। তদন্তে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, কিংবা তাদের সঙ্গে কোনো সংঘবদ্ধ চক্রের সম্পৃক্ততা আছে কিনা, সে বিষয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
রাজধানীর মতিঝিল বিভাগের ডিবি পুলিশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীতে মাদকের অবৈধ প্রবাহ রোধে এই ধরনের গোপন তথ্যভিত্তিক অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাদকের করাল ছোবল থেকে সমাজকে মুক্ত করতে হলে কেবল পুলিশের অভিযান নয়, সাধারণ মানুষের সচেতনতাও জরুরি। সমাজের প্রতিটি স্তরে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে এমন চক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এবং ডিএমপির যৌথ উদ্যোগে রাজধানীতে মাদকবিরোধী কার্যক্রম আরও জোরদার করার পরিকল্পনার কথাও উঠে এসেছে সূত্রের বক্তব্যে।
Leave a Reply