ক্রাইম এডিশন। অনলাইন ডেস্ক।
বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল বলিপাড়ায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) আবারও দেখিয়েছে তাদের মানবিক দায়বদ্ধতা ও সমাজসেবামূলক ভূমিকা। আজ ২৯ জুন ২০২৫, বিজিবির বান্দরবান সেক্টরের অধীনস্থ বলিপাড়া জোন (৩৮ বিজিবি) একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই কর্মসূচির আওতায় বলিবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির ২৭০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।
এ দিন বলিপাড়া জোনের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ জহিরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে খাতা, কলম, পেন্সিল, ইরেজার ও চকলেট তুলে দেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের প্রতি তাদের উৎসাহিত করেন।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সকলে বিজিবির এই মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এই ধরনের কার্যক্রম একদিকে যেমন শিশুদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ায়, তেমনি অন্যদিকে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জনসাধারণের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে।
শিক্ষা সামগ্রী বিতরণের তাৎপর্য
প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা এখনও অনেকাংশেই সীমিত। বিদ্যালয়গামী শিশুদের অনেকেই শিক্ষা উপকরণ কেনার সামর্থ্য রাখে না। এমন পরিস্থিতিতে বিজিবির মতো সংস্থার এই সহায়তা কার্যক্রম শুধুই দান নয়, এটি একটি সামাজিক দায়িত্বের প্রতিফলন। শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ তাদের পড়ালেখার প্রতি উৎসাহ বাড়াবে এবং ঝরে পড়ার হার কমাতে ভূমিকা রাখবে।
বিজিবির সমাজসেবামূলক অবদান
বিজিবি কেবল সীমান্ত রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত নয়, বরং সামাজিক উন্নয়নেও তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাহাড়ি ও দুর্গম অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে শিক্ষা, চিকিৎসা, খাদ্য সহায়তা এবং দুর্যোগকালে সহায়তাসহ নানাবিধ কার্যক্রমে বিজিবি নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে।
এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে বিজিবি জনসাধারণের হৃদয়ে স্থান করে নিচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা ও শ্রদ্ধা আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। শিশুদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করার মতো উদ্যোগগুলো সমাজে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
উপস্থিত অতিথিদের বক্তব্য
জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিশুদের মধ্যে যদি আমরা শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে তারাই ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দেবে।” তিনি আরও জানান, বিজিবি ভবিষ্যতেও এই ধরনের মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও বিজিবির এই উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, অন্যান্য সংস্থাও এই রকম মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসবে।
ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা
এই ধরনের মহতী উদ্যোগ শুধু একটি দিনের অনুষ্ঠান নয়; এটি একটি সচেতনতার বার্তা বহন করে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি শিশুর হাতে শিক্ষা উপকরণ পৌঁছানোর মাধ্যমে একটি আলোকিত ভবিষ্যতের বীজ বপন করা সম্ভব। বিজিবির এই প্রচেষ্টা আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়ুক – এই হোক সকলের কাম্য।
Leave a Reply