সোহেল রানা মাসুদ। ক্রাইম এডিশন ডেস্ক।
ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি দক্ষিণ) ধারাবাহিক মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় পৃথক দুটি অভিযানে হেরোইন ও ইয়াবাসহ দুইজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩০ জুন ২০২৫ রাতের এই অভিযান পরিচালনা করেন ডিবির দক্ষ ও চৌকস টিম।
বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে প্রথম অভিযানটি চালানো হয় ৩০ জুন রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন কদমতলী খালপাড় এলাকা থেকে মোঃ মামুন মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তার পিতার নাম মোঃ ইসমাইল মিয়া এবং তিনি কদমতলী খালপাড় এলাকাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। অভিযানে তার কাছ থেকে ৫০ পুড়িয়া হেরোইন উদ্ধার করা হয়, যা বিক্রির উদ্দেশ্যে তার কাছে সংরক্ষিত ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
ডিবি দক্ষিণ-এর দ্বিতীয় দল একই রাতে ১১টা ১৫ মিনিটে আরেকটি সফল অভিযান পরিচালনা করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকা থেকে মোঃ আকবর (৪১) নামের আরেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। তার পিতার নাম মোঃ তাইজুল ইসলাম। তিনি মূলত কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার গাজীরচর গ্রামের বাসিন্দা হলেও বর্তমানে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন পশ্চিম শুভাঢ্যা এলাকায় বসবাস করছেন। অভিযানকালে তার কাছ থেকে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়, যা তার হেফাজতে ছিল এবং বিক্রির উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-০১, তারিখ- ০১/০৭/২০২৫, ধারা- ৩৬(১) সারণির ৮(খ) অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, মোঃ আকবরের বিরুদ্ধেও একই থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় মামলা নং-০২, ধারা-৩৬(১) সারণির ১০(ক) অনুসারে মামলা দায়ের করে প্রয়োজনীয় আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ডিবির সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃতদের সিডিএমএস (ক্রিমিনাল ডাটাবেইজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখা যায়, মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় পূর্বেও দুটি মাদক মামলা রয়েছে। অপরদিকে মোঃ আকবরের বিরুদ্ধে রাজধানীর ডিএমপি এলাকাধীন মিরপুর মডেল থানা, শাহ আলী থানা, দারুসসালাম থানা এবং রূপনগর থানায় মোট পাঁচটি মাদক মামলা রুজু রয়েছে। এসব তথ্য থেকেই বোঝা যায়, তারা পেশাদার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
ডিবি (দক্ষিণ) এর এই সফল অভিযান রাজধানীর উপকণ্ঠে মাদক বিরোধী কার্যক্রম জোরদারের এক সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং যেকোনো মূল্যে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে সমাজকে রক্ষা করা হবে।
মাদকের বিস্তার রোধে প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি নাগরিককে সচেতন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। একটি নিরাপদ, মাদকমুক্ত ও সুস্থ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।
Leave a Reply