ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগণনা এক পর্যায়ে স্থগিত থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং শুক্রবার সন্ধ্যা পুনরায় শুরু করা হয়েছে। বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে হঠাৎ করে গণনা বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা জরুরি বৈঠকে বসেন; বৈঠক শেষে সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ছটার দিকে গণনা পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং কাজটি শুরু করা হয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে।
প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব একেএম রাশিদুল আলম জানিয়েছে যে, ভোটগণনা আগের মতোই হাতে-কলমে চলবে; তবে দ্রুত ফল ঘোষণার লক্ষ্যে গণনা টিমের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কমিশন যৌথভাবে নিরাপত্তা, পেশাদারিত্ব এবং স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজটি সম্পন্ন করার পক্ষপাতী বলে জানানো হয়েছে।
নির্বাচনে মোট নিবন্ধিত ভোটার ছিলেন ১১,৭৪৩ জন; এর মধ্যে আনুমানিক ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটগ্রহণ গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টায় শেষ হওয়ার পরই গণনা শুরু করা হয়েছিল, কিন্তু শুক্রবার বিকেলে কেন গণনা বন্ধ রাখা হয়েছিল তার পেছনে প্রশাসনিক একাধিক কারণে জরুরি বৈঠক বসানো হয়েছে—যার পরিমাণ ও বিস্তারিত পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে প্রচার মাধ্যমকে জানাবে বলে আশা করা যায়।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে যে, গণনা দ্রুত ও নিরাপদে সম্পন্ন করার জন্য অতিরিক্ত পর্যবেক্ষক ও গণনা টিম দায়িত্বে যোগ করা হচ্ছে। এছাড়া কেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কাগজপত্র যাচাই-পরীক্ষা জোরদার করা হচ্ছে যাতে ভোটের ফল ঘোষণা প্রক্রিয়া অনায়াসে ও স্বস্থির পরিবেশে শেষ করা যায়। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাত ১১টার পর যে কোনো সময় চূড়ান্ত ফল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অফিসিয়াল ঘোষণা আসল পর্যন্ত যে কোনো গুঞ্জন বা অসমর্থিত দাবি এড়াতে গণ্যমান্য সকলকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেছেন কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অংশগ্রহণকারীরা গণনা স্থগিত হওয়ার সময় কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করেন; অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন কেন হঠাৎ করে গণনা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন এই উদ্বেগ নিরসনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং গণনা পুনরায় শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা কেন্দ্রের আশপাশে অবস্থান করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করছে বলে অবগত করা হয়েছে।
নির্বাচনের তফসিল, ভোটগ্রহণ এবং ভোটগণনার প্রতিটি ধাপ আংশিক বা পূর্ণরূপে পর্যবেক্ষণের আওতায় ছিল—স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি কিছু স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষকও কাজ করেন। ভোটগ্রহণ ও গণনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারী ও পর্যবেক্ষক।
এবারের জাকসু নির্বাচন সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে—ভোটের উপস্থিতি বা টার্নআউট যা প্রাথমিকভাবে ৬৭-৬৮ শতাংশ ধরা হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী অংশগ্রহণে আগ্রহের একটি পরিমাপক যা ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতি ও দিক নির্ধারণে সহায়ক হবে। ফলাফল ঘোষণা হয়ে গেলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিকেন্দ্র, ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষাবিদ্যার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচ্য বিষয় হবে।
চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হলে সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং ছাত্র সংগঠন প্রতিক্রিয়া জানাবে; পাশাপাশি ভোটগ্রহণ ও গণনা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে যে কোনো অভিযোগ থাকলে নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তদন্ত-নির্ণয় করা হবে বলে নির্বাচনী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সংক্ষেপে বলা যায়, সকাল–বিকেল নানান টানাপোড়েনের পর জাহাঙ্গীরনগরের কেন্দ্রীয় জাকসু নির্বাচনের ভোটগণনা পুনরায় শুরু হওয়ায় প্রক্রিয়াটি শিগগিরই শেষ করে ফল ঘোষণা করা সম্ভব হবে—তবে অফিসিয়াল ঘোষণার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রতীক্ষা করা দরকার। পাঠক, অধ্যাপক এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে ফল ঘোষণার অপেক্ষা করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।