সোহেল রানা মাসুদ।
কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট | ৭ এপ্রিল ২০২৫
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের কাজিরহাট এলাকার বিদুয়ারমাল্লি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইকারীদের হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন দুই ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে ৫ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে। এ সময় তাদের গতিরোধ করে লাঠি ও আঘাতের মাধ্যমে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে একদল যুবক।
ভুক্তভোগী জানান, তিনি ও তাঁর মামা শিয়ালখোয়া বাজার থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে সোনারহাট রোড হয়ে পাচমাথার বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। রাত গভীর হওয়ায় রাস্তায় যানবাহনের চলাচল ছিল একেবারেই কম। বিদুয়ারমাল্লি ব্রিজের কাছে আসতেই হঠাৎ হেলমেট পরা একজন ব্যক্তি তাদের মোটরসাইকেলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থামার সংকেত দেন।
ভুক্তভোগীর ভাষ্যমতে, ওই ব্যক্তি ফুলহাতা শার্ট ও ফুলপ্যান্ট পরিহিত ছিলেন এবং মাথায় হেলমেট থাকায় মুখমণ্ডল শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। প্রথমে তাঁরা ভাবেন— হয়তো তিনি প্রশাসনের কেউ, তাই থেমে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ব্রিজের নিচে লুকিয়ে থাকা আরও ৮-৯ জন তরুণকে দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের।
তরুণদের বয়স আনুমানিক ১৭ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। কয়েকজনকে গাছের আড়াল ও শ্মশানঘাটের ছায়ায় অবস্থান করতে দেখা যায়। বিষয়টি বুঝে ভুক্তভোগী সাহস করে মোটরসাইকেল নিয়ে হেলমেটধারী ব্যক্তির সামনে দিয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই ব্যক্তি একটি লাঠি দিয়ে আঘাত করেন, তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় চালকের গায়ে না লেগে পাশে পড়ে যায়।
তখনই আরেকজন ব্যক্তি, যার মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা ছিল ও পরনে সাদা গেঞ্জি ও লুঙ্গি, সামনে এসে আবারও হামলা চালান। এ আঘাতে মোটরসাইকেলের হেডলাইট ভেঙে যায়। তবে ভাগ্যক্রমে তারা পড়ে না গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হন এবং দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
পরে তাঁরা স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ছিনতাইকারীরা ততক্ষণে পালিয়ে গেছে। আশ্চর্যের বিষয়, এত বড় ঘটনায় আশপাশের কোনো বাড়ি থেকে কেউ বেরিয়ে আসেননি বা সহায়তা করেননি।
একজন প্রবীণ স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই এলাকায় মাঝেমধ্যেই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। কিছু স্থানীয় তরুণ মিলে সংঘবদ্ধ একটি ছিনতাইকারী চক্র গড়ে তুলেছে, যারা গভীর রাতে পথচারীদের টার্গেট করে।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর দাবি, বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ থানায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। তাঁরা কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) স্যারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, এ ধরনের সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এলাকার সচেতন মহলের অভিমত—সিসি ক্যামেরা স্থাপন, টহল জোরদার এবং স্থানীয় যুবকদের সচেতন করে তুললেই হয়তো এ ধরনের অপরাধ দমন করা সম্ভব।