ক্রাইম এডিশন। অনলাইন ডেস্ক।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) এর আওতাধীন পরশুরাম থানার অধীনে একটি সফল মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানটি পরিচালনা করেন এসআই মোঃ হানিফ উদ্দিন মন্ডল এবং তাঁর সঙ্গীয় ফোর্স। এই অভিযানে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৩ পিস অবৈধ ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট।
অভিযানটি সংঘটিত হয় ১৫ জুন ২০২৫ ইং, রাত আনুমানিক ১১টা ৩০ মিনিটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালাকোয়ার গ্রামে শ্রী তমা চন্দ্র নামের এক ব্যক্তির বসতবাড়ির সামনে সন্দেহভাজন গতিবিধি লক্ষ্য করে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। পুলিশি উপস্থিতি টের পেয়ে একজন পালিয়ে যায় এবং অপর একজন নারীকে আটক করা হয়।
আটককৃত নারীর নাম শ্রীমতি কৃষ্ণা রানী (২৫)। তাকে তল্লাশি চালিয়ে একটি সাদা রঙের প্লাস্টিকের কৌটায় রাখা ১৩ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। আটক করার পর পুলিশ নিশ্চিত হয়, এই ট্যাবলেটগুলো অবৈধভাবে রাখা হয়েছে এবং এর কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই।
পুলিশের ভাষ্য মতে, কৃষ্ণা রানী ছাড়াও আরেকজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তার নাম শ্রী তমা চন্দ্র (৩০)। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন এবং তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনার পরপরই পরশুরাম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার নম্বর ০৩/২৯, তারিখ ১৬/০৬/২০২৫, সময় ০০:১০ ঘটিকা। মামলাটি দায়ের করা হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৩৬(১) সারণি ২৯(ক)/৪১ ধারায়।
ট্যাপেন্টাডল একটি প্রেসক্রিপশন ড্রাগ হলেও এটি অপব্যবহারের জন্য মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সঠিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়া এই ট্যাবলেটগুলো অবৈধভাবে হাতবদল হয় এবং এটি মাদকাসক্তদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ধরনের ওষুধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
বালাকোয়ার গ্রামসহ আশেপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই মাদকের ছায়া রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। এর আগেও এ এলাকায় কয়েকটি ছোট-বড় অভিযান হয়েছে। তবে এবারের অভিযানে সরাসরি মাদকসহ কাউকে গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পরশুরাম থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত কৃষ্ণা রানীর বিরুদ্ধে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশ এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে পরবর্তী অভিযান ও তদন্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তমা চন্দ্রের অবস্থান শনাক্তে বিভিন্ন স্থানে নজরদারি চালানো হচ্ছে।
এই অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশের সদস্যরা বলেন, সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হলে প্রতিটি এলাকায় এমন তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। তারা আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতিতে কাজ করছে প্রশাসন এবং কেউ এই অপরাধে জড়িত থাকলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রয়োজনে গ্রেফতারকৃত আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে আরও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply