ক্রাইম এডিশন। অনলাইন ডেস্ক।
নীলফামারী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি সফল অভিযানে আবারও বেরিয়ে এলো মাদক ব্যবসার ভয়াবহ চিত্র। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে জেলার ১০ নম্বর কুন্দপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব শুটিপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মোঃ আনোয়ার হোসেনকে। তার বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয় ৭০০ গ্রাম গাঁজা।
২০২৫ সালের ২৩ জুন রাতে, আনুমানিক ৮টা ২০ মিনিটে, জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের সরাসরি নির্দেশনায় এই বিশেষ অভিযানটি পরিচালিত হয়। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ আক্তার হোসেন। তার অধীনে একটি চৌকস আভিযানিক দল পূর্ব শুটিপাড়ার একটি নির্দিষ্ট বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেফতার হওয়া আনোয়ার হোসেন (বয়স ৫৫), পিতা-মৃত কলিম উদ্দিন, পূর্ব শুটিপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে সে এলাকায় “গাঁজা আনোয়ার” নামে পরিচিত। মাদকের মতো সামাজিক ব্যাধিকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের মাঝে অসন্তোষ ও আতঙ্ক বিরাজ করছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযানের সময় আনোয়ার হোসেনের শয়নকক্ষের বিছানার নিচে রাখা একটি বাজারের ব্যাগের মধ্যে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় গাঁজার প্যাকেটটি পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলেই আনোয়ারকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে আলামত জব্দ করে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আনোয়ার হোসেন একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিক মাদক মামলার বিচার প্রক্রিয়া বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। তার গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় জনগণ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। এলাকাবাসীর দাবী, এমন অভিযান চলমান থাকলে মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের দৌরাত্ম্য কমে আসবে।
গ্রেফতারের পর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ২০২৫ সালের ২৪ জুন তারিখে নীলফামারী সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর ৩৬(১) সারণির ১৯(ক) ধারায় মামলা (নং-৩২) দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার মাধ্যমে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের দৃঢ় অবস্থান ও গোয়েন্দা পুলিশের সাফল্যে জেলার সচেতন মহল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মাদককে “সামাজিক বিষ” উল্লেখ করে তারা বলেন, এ ধরনের অপরাধ দমনে নিয়মিত ও কঠোর অভিযান চালিয়ে যেতে হবে।
অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, “আমরা চাই এমন অভিযান আরও হোক। মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের কারণে আমাদের সমাজে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে। প্রশাসনের এমন সক্রিয় ভূমিকা আমাদের আশাবাদী করছে।”
দেশব্যাপী মাদক নির্মূল অভিযানকে আরও বেগবান করতে হলে জেলা পর্যায়ের এ ধরনের গোয়েন্দা অভিযানের গুরুত্ব অপরিসীম। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনার পর স্থানীয় মাদক চক্রে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ভবিষ্যতে মাদক ব্যবসা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply