ক্রাইম এডিশন। অনলাইন ডেস্ক।
ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি দক্ষিণ)। জেলা পুলিশের এই সফল অভিযানে মাদক চক্রের এক সক্রিয় সদস্যকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে, যা এলাকাবাসীর নিরাপত্তা ও সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
ঘটনাটি ঘটে ২৮ জুন ২০২৫ খ্রিঃ তারিখ, বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আনিসুজ্জামান পিপিএম-এর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে ডিবি (দক্ষিণ) এর একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকুরিয়া এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মোঃ শাজ্জাতুল ইসলাম শান্ত (২৮) নামে একজন যুবককে আটক করা হয়। তার পিতার নাম মোঃ মামুন এবং মাতার নাম আফসানা বেগম। তিনি ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন ইকুরিয়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
গ্রেফতারের সময় শান্তের দেহ তল্লাশি করে তার কাছ থেকে ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। ডিবি পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলেই তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রমাণসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মাদকের মতো ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি নির্মূলে এই অভিযানটিকে ডিবি দক্ষিণের একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গ্রেফতারকৃত শাজ্জাতুল ইসলাম শান্তর বিরুদ্ধে পূর্বেও একটি মাদক মামলা রয়েছে, ফলে তার বিরুদ্ধে মোট দুইটি মামলা রেকর্ডভুক্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সরবরাহ ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ (১) সারণি ১০(ক) ধারায় একটি নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার নম্বর ৪৬(০৬)২০২৫।
এ প্রসঙ্গে দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “মাদক নির্মূলে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তরুণ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত মাঠে কাজ করছি। মাদক ব্যবসায়ীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
অভিযানের সময় এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরনের স্বস্তি ফিরে আসে। ইকুরিয়া এলাকার বাসিন্দারা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে এমন কঠোর পদক্ষেপ আমাদের সন্তানদের রক্ষা করবে এবং সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনবে।”
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তদন্তের পর তার সঙ্গে জড়িত অন্য সহযোগীদের নাম বের করে তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা এবং সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সমাজ বিশ্লেষকরা। পুলিশ ও ডিবির এমন অভিযান মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের জন্য একটি কঠিন বার্তা — এই অপকর্ম করে আর বেঁচে থাকা যাবে না।
উল্লেখ্য, ইয়াবা ট্যাবলেট বাংলাদেশে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত অবৈধ মাদকদ্রব্যগুলোর একটি। এটি মূলত তরুণদের মধ্যে আসক্তির প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। একে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে নানা অপরাধ, যা সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
সার্বিকভাবে, ডিবি (দক্ষিণ) এর এই সফল অভিযান মাদকবিরোধী চলমান আন্দোলনে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকলে সমাজ থেকে মাদক নির্মূলের পথ আরও সুগম হবে বলে প্রত্যাশা করা যায়।
Leave a Reply