ক্রাইম এডিশন, অনলাইন ডেস্ক
জুলাই মাসের পূর্ণজাগরণ ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবস স্মরণে শেরপুর জেলা সদরে অনুষ্ঠিত হলো ব্যতিক্রমধর্মী স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। দিনটি উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রক্তদান কর্মসূচি ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টায় শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জনাব তরফদার মাহমুদুর রহমান। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামাজিক-চিকিৎসা সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, চিকিৎসক দল, নার্স এবং সাধারণ সেবাপ্রার্থীরা।
এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “এ ধরনের স্বাস্থ্যসেবামূলক উদ্যোগ আমাদের সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও জনকল্যাণে সহায়ক। রক্তদান জীবন রক্ষা করে এবং চিকিৎসা সহায়তা মানুষের মৌলিক অধিকার—এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই আজকের এ আয়োজন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”
উদ্বোধনী পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জনাব শাহ শিবলী সাদিক। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ও রক্তদানের মত মহৎ কাজের সাথে সংযুক্ত হওয়া গর্বের বিষয়। এর মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ ও সচেতনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।”
ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চর্মরোগ, শিশুস্বাস্থ্য ও প্রসূতি সেবার উপর পরামর্শ দেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করেন।
অপরদিকে রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার যুবক ও শিক্ষার্থীরা। আয়োজক সূত্রে জানা যায়, এই কর্মসূচিতে প্রাপ্ত রক্ত ভবিষ্যতে মুমূর্ষু রোগীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং স্থানীয় হাসপাতালের ব্লাডব্যাংকে তা প্রদান করা হবে।
ক্যাম্প পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদল বলেন, “অনেক সময় রোগীরা অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান না। এই ধরণের ফ্রি ক্যাম্প আয়োজন করলে অন্তত একটি দিন হলেও তারা কিছুটা সেবা পেতে পারেন। এ জন্য আমরা বারবার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।”
রক্তদাতারা বলেন, “আমরা মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই রক্ত দিয়েছি। এতে অন্যের জীবন বাঁচাতে পারলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় পুরস্কার।”
দিনব্যাপী এ আয়োজনে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে। অনেকে ফ্রি চেকআপ ও প্রেসক্রিপশন পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
এই কার্যক্রম শেষ হয় দুপুরের পর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার মাধ্যমে। সভায় ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়।
Leave a Reply