1. info@crimeedition.com : Crime Edition : Crime Edition
  2. masud399340@gmail.com : ক্রাইম এডিশন : ক্রাইম এডিশন
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪১ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
শিরোনাম :
কিশোরগঞ্জে থানায় রিপোর্ট করতে গিয়ে বাধার মুখে দুই সাংবাদিক ১২০ বছরের বৃদ্ধ ইদ্রিস শেখ কারাগারে, প্রশ্নবিদ্ধ মানবতা ও বিচারব্যবস্থা আজ আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস: বন্ধনের শক্তি উদযাপনের দিন টঙ্গীতে খোলা ম্যানহোলে পড়ে নারী নিখোঁজ, মিলল ৩৬ ঘণ্টা পর লাশ লালমনিরহাটে দুই ট্রেনের দুর্ঘটনায় বগি উল্টো গেলো শেরপুরে রক্তদান ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা পেল শতাধিক মানুষ টঙ্গীতে উন্মুক্ত ম্যানহোলে পড়ে নারী নিখোঁজ, উদ্ধার তৎপরতা চলছে বগুড়ার সান্তাহারে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত মেরিন ইঞ্জিনিয়ার জয় ফেনী সদর থানায় বার্ষিক পরিদর্শনে গেলেন পুলিশ সুপার হাবিবুর সাংবাদিক নিয়োগের নামে প্রতারণা: কালবেলার নাম ব্যবহার করে সর্বসাধারণকে টার্গেট

১২০ বছরের বৃদ্ধ ইদ্রিস শেখ কারাগারে, প্রশ্নবিদ্ধ মানবতা ও বিচারব্যবস্থা

  • প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫
  • ৫২ বার পড়া হয়েছে

সোহেল রানা মাসুদ, ক্রাইম এডিশন

 

বয়স ১২০ বছর। শরীরে নানান জটিল রোগ বাসা বেঁধেছে। হাঁটার শক্তি নেই, চোখে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, কানে শোনা যায় খুব কম। তবু এমন একজন মানুষ—ইদ্রিস শেখ—কে দেখা যাচ্ছে লাঠি হাতে, দুই পাশে দুই পুলিশ কনস্টেবল ধরে রাখছেন তাঁকে, আদালতের সিঁড়ি বেয়ে নামছেন। এ যেন মানবাধিকারের এক নির্মম দৃশ্যপট।

ঘটনাটি শুধু হৃদয়বিদারকই নয়, তা দেশের বিচারব্যবস্থাকে নিয়েও তীব্র প্রশ্ন তোলে। বৃদ্ধ ইদ্রিস শেখের ৭০ বছরের ছেলে আবুল শেখ যখন বাবাকে প্রিজন ভ্যানে বন্দি অবস্থায় দেখেন, তখন আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি। আদালত প্রাঙ্গণে অঝোরে কাঁদতে থাকেন। চোখের জলে বলেছিলেন, “১২০ বছর বয়সেও বাবাকে জেলের ঘানি টানতে হবে! তিনি কি ন্যায়বিচার পেলেন না?”

দীর্ঘ পুরনো মামলায় জড়িয়ে পড়া

২০০৩ সালে একটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই মামলায় অন্যান্য আসামির সঙ্গে বৃদ্ধ ইদ্রিস শেখকেও যুক্ত করা হয়। যদিও তার বিরুদ্ধে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল, তবুও তিনি বছরের পর বছর ধরে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন।

এমনকি যখন তার চলাফেরা কঠিন হয়ে যায়, তখনো জামিন মেলেনি। অনেকেই বলছেন, তার রাজনৈতিক পরিচয়ই আজ তাঁর সবচেয়ে বড় অপরাধ। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ইদ্রিস শেখ একজন আওয়ামী লীগ সমর্থক ছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের চাপে তাকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব

এদেশে বিভিন্ন আলোচিত মামলায় বহু প্রভাবশালী আসামি খালাস পেয়েছেন। কখনও ৭/৮ জন খুনের আসামী, কখনও গ্রেনেড হামলার অভিযুক্ত, কখনও আবার ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামিরাও মুক্তি পেয়েছেন। সেখানে ১২০ বছর বয়সী এক চলৎশক্তিহীন বৃদ্ধের কারাগারে প্রেরণ—এটা কি ন্যায়বিচার? নাকি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নমুনা?

একজন মানুষ যখন জীবনের শেষপ্রান্তে, তখন তার জন্য শর্তসাপেক্ষ মুক্তি, মানবিক বিবেচনায় জামিন বা অনুকম্পা প্রদর্শনের সুযোগ রাখে অনেক রাষ্ট্রই। কিন্তু বাংলাদেশে এমন মানবিক বিচার এখন যেন প্রহসন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সামাজিক মাধ্যম ও নাগরিক প্রতিক্রিয়া

বৃদ্ধ ইদ্রিস শেখের ছবি এবং ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ বলছেন—এই ছবিই আজকের ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থার’ আসল প্রতিচ্ছবি। অনেক তরুণ সামাজিক মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে বলছেন, #জাস্টিস_ফর_ইদ্রিস, #বিচার_ব্যবস্থার_পরিবর্তন_চাই।

সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্ন—এটাই কি বাংলাদেশ চেয়েছিল? একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে, একজন শতবর্ষী ব্যক্তির সঙ্গে এমন আচরণ কতটা মানবিক?

করণীয় ও প্রত্যাশা

আইন ও বিচার প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা টিকিয়ে রাখতে হলে এমন ঘটনা বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে অতি-বৃদ্ধ ও অসুস্থ আসামিদের ক্ষেত্রে মানবিক বিবেচনার নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কেউ যেন বিচারহীনতার শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করা জরুরি।

বৃদ্ধ ইদ্রিস শেখের এই দুঃখজনক ঘটনাই যেন আর কারও জীবনে পুনরাবৃত্তি না হয়—সেই প্রত্যাশাই আজ সাধারণ মানুষের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন