1. info@crimeedition.com : Crime Edition : Crime Edition
  2. masud399340@gmail.com : ক্রাইম এডিশন : ক্রাইম এডিশন
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রোগী দেখার সময় গেম খেলার অভিযোগে চিকিৎসক, দুদকের অভিযান শুরু হাদির ওপর গুলিবর্ষণ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে ঘিরে আলোচনা ঢাকায় গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির অবস্থা সংকটজনক, চিকিৎসক জানালেন ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার, অবশেষে চিকিৎসক সাজিদের মৃত্যু ঘোষণা রাজশাহীর তানোরে নলকূপের গর্তে পড়ে শিশুর ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছেন বুধবার নরসিংদী পুলিশ লাইন্স পরিদর্শন করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় দিনমজুর বাবার সংগ্রাম জয়ে দুই মেয়ের বিসিএস সাফল্যের গল্প গঙ্গাচড়ায় উন্নয়ন সহযোগিতায় একযোগে কাজের আহ্বান জেলা প্রশাসকের ধামরাইয়ে মুজিবের মূর্তি পাহারায় আনসার নিয়োগে প্রশ্ন উঠেছে

জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপেক্ষিত, জুলাই ঘোষণায় বিতর্ক

  • প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩১৯ বার পড়া হয়েছে

সোহেল রানা মাসুদ, ক্রাইম এডিশন

 

সাম্প্রতিক এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের বলেছেন, “২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দেশের সাধারণ মানুষ ও ছাত্রসমাজের সম্মিলিত গণআন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটে।” তিনি বলেন, জনগণের এই আন্দোলন ছিল আত্মত্যাগ ও ঐক্যের এক ঐতিহাসিক উদাহরণ।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ—রাজনৈতিক দল, শিক্ষক-ছাত্র, শ্রমিক, হকার, প্রবাসীসহ সকলেই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল একটি ইনসাফপূর্ণ, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।

তবে গত ৫ আগস্ট জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত ২৮ দফার জুলাই ঘোষণাপত্রকে ‘অপূর্ণাঙ্গ’ আখ্যা দিয়ে ডা. তাহের বলেন, “এই ঘোষণায় জনগণের মূল আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি।”

তিনি অভিযোগ করেন, ঘোষণায় ১৯৪৭ সালের আজাদী সংগ্রাম, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা, ২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ বহু ঘটনা উপেক্ষিত হয়েছে। তাছাড়া, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা শিক্ষক-ছাত্র, প্রবাসী ও অনলাইন এক্টিভিস্টদের ভূমিকার কোনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, যা ইতিহাসের প্রতি অবিচার।

ডা. তাহের বলেন, “জুলাই আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ৯ দফা দাবি, যা পরে এক দফায় রূপান্তরিত হয়। কিন্তু ঘোষণাপত্রে এ বিষয়গুলো সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা সংলাপের মাধ্যমে ১৯টি বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি করে। এর ভিত্তিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। অথচ ঘোষণাপত্রে এই সনদের কোনো উল্লেখ নেই।

তাহের বলেন, “ঘোষণাপত্রে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সময়সীমা, প্রক্রিয়া বা কৌশল স্পষ্টভাবে বলা হয়নি। বরং ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের ওপর বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়ে জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্বহীন করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সংস্কার, বিচার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। দলটি আগত জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত ডিসেম্বর-জুন টাইমলাইনকে শর্তসাপেক্ষে ইতিবাচকভাবে দেখছে।

তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করায় জাতি বিস্মিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য অনুযায়ী সংলাপ ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনকাল নির্ধারণ করা উচিত ছিল।”

তিনি বলেন, “১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর যেমন লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে নির্বাচন হয় এবং পরে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়, ঠিক তেমনিভাবে এবারও জুলাই জাতীয় সনদের জন্য আইনি ভিত্তি দেওয়া উচিত।”

এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৯০ সালের অভ্যুত্থানের দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, তখন তিন জোটের রূপরেখার ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অথচ আইনি ভিত্তির অভাবে রূপরেখার অনেক বিষয় বাস্তবায়ন হয়নি। তাই তিনি প্রশ্ন রাখেন—“এখন কেন জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দিতে বাধা রয়েছে?”

ডা. তাহের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত জুলাই সনদকে অবিলম্বে অধ্যাদেশ, এলএফও বা গণভোটের মাধ্যমে আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে। তা না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়ে যাবে।”

তিনি বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) তৈরি করতে হবে। প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে।

তাহের আরও বলেন, “জুলাই সনদের বিষয়ে জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তা ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত না হওয়ায় দেশে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।” তিনি বলেন, “শহীদ পরিবার, আহত আন্দোলনকারী এবং সাধারণ মানুষ মনে করছেন তাদের ত্যাগ অবমূল্যায়িত হয়েছে।”

সাংবাদিকদের উদ্দেশে ডা. তাহের বলেন, “আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, অবিলম্বে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধন করে তাতে ইতিহাস, আত্মত্যাগ ও জনমতের প্রতিফলন ঘটানো হোক। সেই সাথে এই ঘোষণার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হোক।”

শেষে তিনি সাংবাদিকদের ধৈর্যসহকারে বক্তব্য শোনার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান এবং বলেন, “আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© ২০২৫, ক্রাইম এডিশন, সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই সাইটের সমস্ত লেখা, ছবি ও কনটেন্ট কপিরাইট আইনের আওতায়। অনুমতি ছাড়া কপি, ব্যবহার বা পুনঃপ্রকাশ নিষিদ্ধ। স্বত্বাধিকার দাবি থাকলে অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। যথাযথ যাচাই-বাছাই ও প্রমাণ সাপেক্ষে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট অপসারণ করা হবে।

Theme Customized BY LatestNews