ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
২০২৫ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ জেলায় শারীরিক মাপ ও কাগজপত্র যাচাই কার্যক্রমের প্রথম দিন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের স্লোগান “সেবার ব্রতে চাকরি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, যা নতুন প্রজন্মকে সমাজ ও দেশের সেবায় নিয়োজিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
শনিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সকালে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স মাঠে জেলা পুলিশের আয়োজনে এ কার্যক্রম শুরু হয়। জেলা পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ফারুক হোসেন মহোদয়ের সভাপতিত্বে ও সরাসরি দিক-নির্দেশনায় নিয়োগের প্রথম দিনের সব ধাপ শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়।
প্রথম দিনের কার্যক্রম
প্রথম দিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত প্রার্থীরা নির্ধারিত সময়ে পুলিশ লাইন্সে উপস্থিত হন। শুরুতেই প্রার্থীদের শারীরিক যোগ্যতা যাচাই করা হয়, যার মধ্যে উচ্চতা, ওজন ও বুকের মাপ নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি প্রার্থীদের জমাকৃত কাগজপত্রের সত্যতা যাচাই করা হয় যাতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম বা ত্রুটি না থাকে।
পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও ন্যায়সংগত পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। কোনো প্রকার সুপারিশ, ঘুষ বা অবৈধ প্রভাব যেন কাজে না লাগে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রয়েছে।
পুলিশ সুপারের বক্তব্য
পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ফারুক হোসেন বলেন,
> “বাংলাদেশ পুলিশ সর্বদা দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও সেবায় নিয়োজিত। ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে যারা যোগ দেবে, তারা হবে ভবিষ্যতের সৎ, দক্ষ ও সেবামুখী পুলিশ সদস্য। আমরা চাই যোগ্য, শারীরিকভাবে সক্ষম ও নৈতিকভাবে দৃঢ় প্রার্থীরা এই বাহিনীতে যুক্ত হোক।”
তিনি আরও যোগ করেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া জেলা পুলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম এবং এটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার গুরুত্ব
ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীতে প্রবেশের প্রথম ধাপ। এই পদে নির্বাচিত প্রার্থীরা পরবর্তীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন ও জনগণের সেবা প্রদানে ভূমিকা পালন করবেন।
বাংলাদেশ পুলিশের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া কেবল একটি চাকরির সুযোগ নয়, বরং এটি একটি দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। প্রার্থীরা শুধু বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবেই নয়, বরং দেশের নিরাপত্তা রক্ষার অংশীদার হিসেবেও কাজ করবেন।
পরবর্তী কার্যক্রম
প্রথম দিনের শারীরিক মাপ ও কাগজপত্র যাচাই শেষে নির্বাচিত প্রার্থীরা পরবর্তী ধাপে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। এই ধাপগুলোতে লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ জেলায় এই নিয়োগ কার্যক্রম কয়েকদিন ধরে চলবে, যাতে সকল প্রার্থী তাদের যোগ্যতা যাচাইয়ের সুযোগ পান।
স্থানীয় মানুষের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় বাসিন্দারা এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন। অনেকেই মনে করছেন, এর মাধ্যমে মেধাবী ও সৎ যুবকরা পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবেন, যা ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সহায়ক হবে।
একজন অভিভাবক বলেন,
> “আমরা চাই আমাদের সন্তানরা দেশের সেবায় নিয়োজিত হোক। এই ধরনের স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া আমাদের আস্থা বাড়ায়।”
উপসংহার
সিরাজগঞ্জে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ কার্যক্রমের প্রথম দিন যে সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে, তা প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ পুলিশ পেশাদারিত্ব ও সততার মানদণ্ড বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়া থেকে নির্বাচিত কনস্টেবলরা ভবিষ্যতে দেশের সেবা ও নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
Leave a Reply