ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
ঢাকা জেলার ডিবি (উত্তর) এর অভিযানে আবারও মাদকবিরোধী সাফল্য এসেছে। রাজধানী সংলগ্ন আশুলিয়া এলাকায় বিশেষ অভিযানে ১০৫ পিস ইয়াবাসহ দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। মাদক নির্মূলে সরকারের চলমান জিরো টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
জানা যায়, ঢাকা জেলা পুলিশের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামান (পিপিএম) এর নির্দেশে ১৬ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) অফিসার ইনচার্জ মোঃ জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল এ অভিযান পরিচালনা করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়া থানাধীন গাজিরচট এলাকায় অবস্থানরত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে নামে গোয়েন্দা টিম।
এসময় দুইজন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করে ঘিরে ফেলে পুলিশ। পরে তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছে থেকে ১০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হলেন-
১. মোঃ আশিক ভূইয়া (২৫), পিতা: মোঃ রমজান আলী ভূইয়া, মাতা: মোছাঃ আছিয়া বেগম, ঠিকানা: উত্তর গাজিরচট, থানা: আশুলিয়া, জেলা: ঢাকা।
২. মোঃ জলিল মিয়া (২৪), পিতা: মৃত আব্দুস সামাদ, মাতা: মোছাঃ জহুরা বেগম, ঠিকানা: চৌদা লক্ষীপুর, থানা: ফুলবাড়িয়া, জেলা: ময়মনসিংহ। বর্তমানে সে গাজিরচট এলাকায় বুড়ির বাজার সংলগ্ন মোজাম্মেল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকত।
আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় নিয়মিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে তারা এবং নিয়মিতভাবে এমন অভিযান চালানো হবে।
মাদক ব্যবসার বিস্তার রোধে পুলিশ নিয়মিত গোপন তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান পরিচালনা করছে। এ ধরণের সাফল্যের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বারবার প্রমাণ করছে যে, সমাজকে মাদকের কালো ছোবল থেকে রক্ষা করতে তারা সর্বদা তৎপর। এ অভিযানের ফলে আশুলিয়ায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তি অনুভব করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গাজিরচট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কিছু মাদক ব্যবসায়ী সক্রিয় ছিল। তাদের কারণে তরুণ প্রজন্ম ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছিল। পুলিশি তৎপরতায় এই নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ইয়াবা ব্যবসার মূল চক্রকে চিহ্নিত করে ধরতে পারলে বড় ধরণের সাফল্য পাওয়া সম্ভব হবে। ইতোমধ্যেই গোয়েন্দা পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে, এই দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইয়াবা সরবরাহের মূল উৎস এবং নেপথ্যের বড় কারবারিদের খুঁজে বের করা যাবে।
এদিকে, ঢাকা জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামান (পিপিএম) মাদকবিরোধী অভিযানে আরও গতি আনতে তার টিমকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সমাজের সাধারণ মানুষকেও মাদকের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে মাদক একটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে চিহ্নিত। বিশেষ করে ইয়াবার ভয়াল গ্রাসে বিপথগামী হচ্ছে অনেক তরুণ-তরুণী। সমাজের এই ক্ষতিকর দিক বন্ধ করতে পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন, পরিবার ও সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা জেলার গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, সম্প্রতি তারা একাধিক অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। এসব অভিযানের ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা অনেকাংশেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তবে পুরো নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে নিয়মিত অভিযান এবং জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ ধরনের সফলতা প্রমাণ করে যে, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব। ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীর আটক হওয়া নিঃসন্দেহে মাদকবিরোধী যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।
Leave a Reply