ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
রংপুরে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় দিনের কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ২২ আগস্ট ২০২৫ ইং শুক্রবার সকাল ৮টায় রংপুর জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে দিনব্যাপী এ কার্যক্রম শুরু হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সম্পন্ন হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে বাছাইকৃত প্রার্থীদের নিয়ে এই ধাপে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করা হয়। এর আগে প্রথম দিনে প্রার্থীদের উচ্চতা, ওজন ও শারীরিক মাপ পরিমাপের পাশাপাশি কাগজপত্র যাচাই করা হয়। দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হয় ২০০ মিটার দৌড়, পুশআপ, লং জাম্প ও হাই জাম্প পরীক্ষার ধাপ।
তৃতীয় দিনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় নারী ও পুরুষ প্রার্থীরা আলাদা আলাদা ধাপের শারীরিক দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় অংশ নেন। পুরুষ প্রার্থীদের জন্য ছিল ১৬০০ মিটার দৌড়, আর নারী প্রার্থীদের জন্য ছিল ১০০০ মিটার দৌড়। এছাড়া টায়ার ড্রাগিং, রোপ ক্লাইম্বিংসহ বেশ কয়েকটি শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়।
পুরো প্রক্রিয়াটি নিবিড় তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও রংপুর জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আবু সাইম এ সময় উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে আগত একজন পুলিশ সুপার, রংপুর রেঞ্জ অফিস থেকে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং অন্যান্য জেলার থেকে আগত অতিরিক্ত পুলিশ সুপারবৃন্দ। পাশাপাশি জেলা পুলিশের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে পুরো কার্যক্রম তদারকি করেন।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, যেসব প্রার্থী এই শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছেন, তারা আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। লিখিত পরীক্ষার পর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। সবগুলো ধাপ পেরিয়ে সর্বশেষ যোগ্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রদান করা হবে।
এ প্রসঙ্গে রংপুর জেলার পুলিশ সুপার বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও মেধাভিত্তিক। কোনো ধরণের সুপারিশ, ঘুষ বা অবৈধ প্রভাব এখানে কার্যকর নয়। শারীরিক সক্ষমতা, লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে যে প্রার্থীরা প্রকৃতভাবে যোগ্য প্রমাণিত হবেন, তারাই চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাবেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থী নিয়োগের মাধ্যমে একটি আধুনিক, জনবান্ধব পুলিশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এজন্য সকল পরীক্ষার্থীকে সততা, আত্মবিশ্বাস এবং মেধার পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা জানান, স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে দেখে তারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। বিশেষ করে নারীরা জানিয়েছেন, সমান সুযোগ পেয়ে তারা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আজকের দিনব্যাপী কার্যক্রমে পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তারা শৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রার্থীদের দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ায় পুলিশ সুপার সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং প্রার্থীদের সফলতা কামনা করেন।
এভাবে ধাপে ধাপে রংপুর জেলার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা এগিয়ে যাচ্ছে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরা শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে আগামী দিনে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
Leave a Reply