ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
লালমনিরহাট জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চারজন সক্রিয় ছিনতাইকারীকে আটক করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভিকটিমের ছিনতাই হওয়া ৯০ হাজার টাকা ও একটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপের কারণে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া ভুক্তভোগী তার টাকা ফেরত পেয়েছেন।
জানা যায়, জেলা পুলিশ সুপার জনাব মোঃ তরিকুল ইসলাম-এর দিকনির্দেশনায় ২০২৫ সালের ২৭ আগস্ট লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে সদর থানার অন্তর্গত ১০ নম্বর বড়বাড়ী ইউনিয়নের বড়বাড়ী গরুর হাট এলাকায় সক্রিয় ছিনতাইকারী চক্রের চার সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—
১। মোঃ সোহাগ হোসেন ওরফে বুদে (৩৫)
২। মোঃ রতন (৩২)
৩। মোঃ আমিনুল ইসলাম (৩৫)
৪। মোঃ মোস্তাফিজার রহমান (৪৩)
পুলিশ জানায়, বড়বাড়ী গরুর হাটে আসা ক্রেতাদের টার্গেট করে ওই চারজন পরিকল্পিতভাবে ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দ্রুত অভিযান চালায় এবং ভিকটিমের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার করে। একই সঙ্গে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত ধারালো চাকুও জব্দ করা হয়।
অভিযানে থাকা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে হাট এলাকায় সক্রিয় ছিল। বিশেষ করে কোরবানির হাট কিংবা সাপ্তাহিক পশুর হাটকে কেন্দ্র করে তারা ক্রেতা-বিক্রেতাদের ওপর নজর রাখত। সুযোগ বুঝে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া তাদের নিয়মিত কৌশল ছিল। তবে পুলিশের তৎপরতায় এবার তাদেরকে হাতেনাতে ধরা সম্ভব হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অপরাধ দমন ও সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে। অপরাধীরা যতোই প্রভাবশালী হোক না কেন, আইনের আওতার বাইরে কেউ নয়।
পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা পুলিশ সবসময় সতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে যেসব স্থানে আর্থিক লেনদেন বেশি হয়— যেমন হাট, বাজার ও মেলা— সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টহল ও বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হচ্ছে যাতে কোনো ধরনের অপরাধ ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বড়বাড়ী গরুর হাট এলাকার মানুষ এ ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কিছু ছিনতাইকারী সক্রিয় থাকলেও পুলিশ এবার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে একটি চক্রকে ধরতে সক্ষম হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা আরও বেড়েছে।
অপরাধ দমনে পুলিশের ধারাবাহিক এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে কোরবানির মৌসুমে যেখানে নগদ অর্থ লেনদেন বেশি হয়, সেখানে পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
গ্রেফতারকৃত চারজনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের হয়েছে এবং তাদের বিষয়ে আরও তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
Leave a Reply