ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও হেরোইনসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩০ আগস্ট ২০২৫) গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে তারাগঞ্জ থানা পুলিশ উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তারাগঞ্জ থানার এসআই (নিঃ) মোঃ মাসুদ রানা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রাতে কুর্শা ইউনিয়নের অনন্তপুর হাজীপাড়া গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন। রাত আনুমানিক ১২টা ২৫ মিনিটে অভিযানের সময় পুলিশ লক্ষ্য করে যে, দুইজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করে আটক করে।
আটককৃতদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়। তারা হলেন—
১. মোঃ লুৎফর রহমান (৪০), পিতা-মৃত ছদরুল ইসলাম, সাং-উত্তর খলেয়া বালাটারী, থানা-গংগাচড়া, জেলা-রংপুর।
২. মোছাঃ ওছপেয়ারা বেগম (৩৫), স্বামী- মোঃ লুৎফর রহমান, পিতা-মোঃ ওসমান গণি, সাং-উত্তর খলেয়া বালাটারী, থানা-গংগাচড়া, জেলা-রংপুর।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় লোকজন ও ঘটনাস্থলের সাক্ষীদের উপস্থিতিতে আটককৃতদের শরীর ও অবস্থানস্থল তল্লাশি করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৪.২৫ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি সাদা প্লাস্টিকের বাজারের ব্যাগে রাখা বিপুল অঙ্কের নগদ অর্থ জব্দ করা হয়, যার পরিমাণ দাঁড়ায় মোট ১০ লাখ ৬০ হাজার ৫৪০ টাকা।
রাত আনুমানিক ১টা ৩৫ মিনিটে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ও নগদ অর্থ আনুষ্ঠানিকভাবে জব্দ করা হয়। এরপর আটককৃত দুজনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ ঘটনায় গংগাচড়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাদকবিরোধী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
স্থানীয় বাসিন্দারাও পুলিশের এ সফল অভিযানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তারা জানান, মাদকের কারণে তরুণ সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় নেশার কবলে পড়ে নতুন নতুন অপরাধ জন্ম নিচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে পুলিশের পাশাপাশি সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সচেতন হতে হবে।
পুলিশ সূত্র মতে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে পূর্বেও একাধিক অভিযোগ ছিল। তবে এবার বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও মাদকসহ গ্রেফতার হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
রংপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মাদক নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে বলে তারা জানান।
এদিকে সচেতন নাগরিকদের অভিমত, শুধু অভিযান চালালেই হবে না, মাদকের মূল উৎস ও চক্রকে ভেঙে দিতে হবে। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, মাদক উৎপাদন, সরবরাহ ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মূল হোতাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হোক।
সর্বমোট, তারাগঞ্জ থানার এ অভিযানে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থ জব্দ করা হয়েছে, অন্যদিকে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত দুইজন সক্রিয় সদস্যকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশের এ পদক্ষেপ এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও আস্থার জন্ম দিয়েছে।
Leave a Reply