
ক্রাইম এডিশন, ডেস্ক রিপোর্ট: ১১ অক্টোবর, ২০২৫
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, “জুলাই সনদ” বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এক ঐতিহাসিক দলিল। তাই নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোটের মাধ্যমে এ সনদের আইনি স্বীকৃতি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। জনগণের মতামত ও অংশগ্রহণ ছাড়া জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী, কচাকাটা ও ফুলবাড়ী এলাকায় আয়োজিত দুটি পৃথক দায়িত্বশীল সমাবেশে (পুরুষ ও মহিলা) তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যটি লিখিত আকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।
মাওলানা হালিম বলেন, “দীর্ঘ ১৫ বছরের দুঃশাসন, জুলুম ও নির্যাতনের অন্ধকার অতিক্রম করে আজ বাংলাদেশ নতুন সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। জনগণ এখন একটি ন্যায়ভিত্তিক, ইনসাফপূর্ণ সমাজ চায়। ইসলামের আদর্শে গঠিত ন্যায়নিষ্ঠ সমাজই মানুষের প্রকৃত কল্যাণ, ন্যায়বিচার ও মুক্তি নিশ্চিত করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই জনগণের পাশে থেকেছে এবং ইসলামের ন্যায়নীতি ও ইনসাফের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। আগামী দিনের বাংলাদেশে ন্যায়ের শাসন, জবাবদিহিতা ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে দলটি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তার মতে, জামায়াতে ইসলামী আজ ইতিবাচক পরিবর্তন ও নতুন সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠেছে। অতীতের সরকারগুলো জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যার ফলে দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ গভীর সংকটে পড়েছে।
মাওলানা হালিম বলেন, “বর্তমানে জনগণ আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন। বিশেষ করে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি নিয়ে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামপ্রেমী জনগণ এখন এমন রাজনৈতিক কাঠামোর প্রত্যাশা করছে, যেখানে সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ও মতামতের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।”
তিনি জানান, জামায়াতসহ সাতটি ইসলামী ও সমমনা রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে মাঠে সক্রিয়ভাবে কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এ দলগুলোর ঘোষিত ৫ দফা গণদাবি বাস্তবায়িত হলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি উৎসবমুখর, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে।
মাওলানা হালিম বলেন, “গণভোটের মাধ্যমে জনগণ নিজ হাতে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, আর সেই সিদ্ধান্তই হবে জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি।”
কুড়িগ্রাম জেলার দুটি আসনে অনুষ্ঠিত দায়িত্বশীল সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন যথাক্রমে—
কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও ১ নং আসন পরিচালক মাওলানা আব্দুল হামিদ, এবং
২ নং আসন পরিচালক মুহাম্মাদ শাহজালাল সবুজ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক আজিজুর রহমান সরকার, কুড়িগ্রাম জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকী, কুড়িগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলী সরকার।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সেক্রেটারি মাওলানা নিজাম উদ্দিন, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর সবুর খান, আলতাফ হোসেন ও জহুরুল ইসলাম।
ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সেক্রেটারি মোবাশ্বের রাশেদ্বীনসহ জামায়াত, ছাত্রশিবির, মহিলা বিভাগ ও ছাত্রীসংস্থার নেতৃবৃন্দ সমাবেশে অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের ভিত্তিতে “জুলাই সনদ” বাস্তবায়িত হলে জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের নতুন অধ্যায় সূচিত হবে।